মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছেন সৌদি যুবরাজরা!

মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসি এক প্রতিবেদনে সৌদি আরবকে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে মাদকের রাজধানী হিসেবে অভিহিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাদক আটকের বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করা হয়। এতে বলা হয়, সৌদি যুবরাজরা নিজেদের ক্ষমতা ব্যবহার করে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছেন।

ডালিমের মধ্যে করে মাদক পাচারের চেষ্টা

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মাদকের চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় সৌদি আরব বর্তমানে মাদক কারবারের জন্য একটি লাভজনক বাজারে পরিণত হয়েছে। মাদকের কারবার ও এর বিস্তারে সৌদি যুবরাজদের হাত থাকার কথা জানা গেলেও সৌদি কর্মকর্তারা এক্ষেত্রে যুবরাজদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার বিরোধী।

গত জুনে লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছিল, ‘কেপ্টাগন’ নামক মাদকের আড়াই লাখ ট্যাবলেট সৌদি আরবে পাচারকালে তা আটকে দেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনোমিস্ট জানায়, বেশ কয়েকজন সৌদি যুবরাজ সিরিয়া থেকে মাদক সংগ্রহ করে তা সৌদি আরবসহ পারস্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোতে বিক্রি করছে।

সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল এসব মাদকের

এর আগে গত এপ্রিলে রিয়াদ জানায় লেবানন থেকে মাদকের ট্যাবলেট সৌদি আরবে পাচারের চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে। ডালিমের একটি চালানের মধ্যে দিয়ে এসব মাদক সৌদি আরবে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর জেরে সে সময় সৌদি সরকার লেবানন থেকে সৌদিগামী কিংবা সৌদি আরবের ওপর দিয়ে অন্যান্য দেশে সবজি ও ফলমূল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

ছয় বছর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী সৌদি আরবে পাচারকালে দুই টন ‘কেপ্টাগন’ নামক মাদকের ট্যাবলেট আটক করে। সে সময় এর সঙ্গে জড়িত আবদুল মহসিন বিন ওয়ালিদ বিন আবদুল আজিজ নামে এক সৌদি যুবরাজ এবং তার চার সহযোগীকে আটক করেছিল লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী।

পর্যবেক্ষকদের অভিমত, মাদক কারবার ও চোরাচালানে সৌদি যুবরাজদের জড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তাদের যথেষ্ট ক্ষমতা। এমনকি এ কাজে তারা ব্যক্তিগত বিমানও ব্যবহার করছেন।

এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে ফরেন পলিসি জানায়, গত মাসে সৌদি আরবে মাদক পাচারের তিনটি বড় চালান ধরা পড়েছে। এ থেকে বোঝা যায় সৌদি সমাজে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে এবং বর্তমানে সেখানে মাদকের ব্যবহার সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবের সমাজব্যবস্থায় নজিরবিহীন পরিবর্তন এসেছে। রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা থেকে দেশটি তথাকথিত উদার সমাজব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আগে যেসব বিষয় কল্পনাও করা যেত না, যেসব বিষয় এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। নাইট ক্লাব ও নাচ গান চালু করা, জুয়ার আড্ডা বসানো ইত্যাদি নানাবিদ কর্মকাণ্ডের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এসবের অন্যতম অনুষঙ্গ মাদকেরও বিস্তার ঘটছে সেখানে।