ছন্নছাড়া বার্সা-জুভেন্টাস

২০২১ সালের আগস্ট যেন সবকিছু ওলটপালট করে দেয়ার মাস। যে মেসিকে বার্সার ঘরের ছেলে মনে করা হতো, এ মাসেই তার ২১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় কাতালান ক্লাবটির সাথে। মনে করা হতো, রোনালদোর সাথে জুভেন্টাসের রসায়ন জমে গেছে, অথচ সেই দল ছেড়ে হঠাৎ করেই পুরনো বাড়ি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে চলে যান রোনালদো, সেটাও আগস্ট মাসেই। মেসি-রোনালদোর হঠাৎ ঘরছাড়ায় ভালো নেই বার্সা-জুভেন্টাস।

রোনালদো ও মেসি

২১ বছর আগে মেসি যুক্ত হয়েছিলেন বার্সেলোনার সাথে। দলকে প্রতিদান দিতে ভুলেননি মেসি। কোনো সময়েই তার মুখ থেকে শোনা যায়নি দলবদলের কথা। মেসি বলতেন, তার ক্যারিয়ার শেষ করে যাবেন স্পেনের ক্লাবটিতেই। সেই ক্লাব ৫ আগস্ট ঘোষণা করে, মেসির চুক্তি নবায়নে তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ। লা লিগার বিধিনিষেধ ও আর্থিক সমস্যায় তারা মেসিকে ‘না’ বলে দেয়। এর পাঁচদিন পর মেসি যোগ দেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই, পিএসজিতে।

তার বিদায়ের পর দলে আরো কিছু রদবদল আসে, সভাপতিও পাল্টে যায়, কোচ করে আনা হয় তাদেরই পুরনো খেলোয়াড় জাভিকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই ছন্দ ফিরে পায়নি মেসির সাবেক এই দলটি। বার্সা এখন আর শিরোপার আশা করে না, চারে থাকতে পারলেই ধন্য মনে করে-এমন অবস্থায় পৌঁছে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে। দলে আনসু ফাতিসহ বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। কিন্তু সেসবে যেমন দর্শক-সমর্থকদের মন ভরছে না, তেমনি যোগাড় হচ্ছে না পয়েন্টও। ফলে শিরোপার অনেক দূর দিয়েই হাঁটতে হচ্ছে মেসিবিহীন বার্সেলোনাকে।

রোনালদো ও মেসি এখন অন্য দলের জন্য মাঠে নামেন

অন্যদিকে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাস থেকে বিদায়টা ছিল কিছুটা ভিন্ন রকমের। হঠাৎ করেই জুভেন্টাস থেকে তার ছুটি হয়ে যায়। ২৭ আগস্ট থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড় হয়ে যান পতুর্গিজ এই তারকা। জুভেন্টাসের হয়ে ১৩৪টি ম্যাচে মাঠে নেমে রোনালদো করেছিলেন ১০১ গোল।

জুভেন্টাস অত্যন্ত খারাপভাবে মৌসুম শুরু করার পর কিছুটা উন্নতি করেছে। কিন্তু পয়েন্ট টেবিলে রোনালদোহীন জুভেন্টাসের অবস্থান পঞ্চম স্থানে। শীর্ষে থাকা দলটির সাথে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান এখনই ১২। ফলে শিরোপার আশা এ মৌসুমের জন্য তারা বাদই দিয়েছে।

বার্সা-জুভেন্টাস থেকে মেসি-রোনালদো চলে গেছে চার মাস হলো। এরই মধ্যে সাবেক ক্লাবগুলো তাদের মিস করতে শুরু করেছে। বুঝতে শুরু করেছে তাদের গুরুত্ব। দলগুলো এখন খেলছে বটে, কিন্তু মনে হচ্ছে কোনো ছন্দ, লক্ষ্য নেই।

বাংলাদেশে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝে না বাঙালি। এখন মনে হচ্ছে, বাঙালির সেই প্রবাদ বার্সা-জুভেন্টাসের সাথে খুব সুন্দরভাবে ফিট হয়ে গেল।