রাজনীতিক-গণমাধ্যমকে কাশ্মির পুলিশের হুঁশিয়ারি!

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরে গত বছরের পুরোটা সময় জুড়েই নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুরো দেশজুড়েই আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নিরীহ সাধারণ কাশ্মিরিদের হত্যার অভিযোগ ওঠে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে যে তদন্ত হয় তা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ অবস্থায় সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান নিয়েছে তারা। বলেছে, তদন্ত নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলার অধিকার কারো নেই।

অবরুদ্ধ কাশ্মির

কাশ্মিরের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ দিলবাগ সিংহ শুক্রবার বলেন, তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিকদের নেই। কারণ তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে রাজনীতিকদের মনগড়া কথায় পুলিশ ‘আহত’ হয়। গত নভেম্বর মাসে শ্রীনগরের হায়দরপোরার বিতর্কিত সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

কাশ্মিরের উচ্চপদস্থ এ পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, হায়দরপোরা সংঘর্ষ নিয়ে তদন্ত স্বচ্ছভাবেই হয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিকদের সমালোচনায় তিনি ‘ব্যথিত’। তাদের মন্তব্যকে আইনবিরুদ্ধ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যদি তাদের কাছে প্রমাণ থাকে, তা হলে তা তদন্তকারী প্যানেলের সামনে তুলে ধরা উচিত।

 কাশ্মিরের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ দিলবাগ সিংহ

গত ১৫ নভেম্বর শ্রীনগরের পার্শ্ববর্তী এলাকা হায়দরপোরায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজনকে হত্যা করা হয়। পুলিশের দাবি, তারা সবাই জঙ্গি কর্মকাণ্ডে যুক্ত। কিন্তু পরে দেখা যায়, চারজনের মধ্যে একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী, একজন ডাক্তার, একজন কিশোর। বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ তাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে নিয়ে তাদের লাশ দাফন করে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হলে পুলিশ আবার লাশ তুলে পরিবারের কাছে ফেরত দেয়। সব মিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে পুলিশ প্রশাসন। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি পুলিশের এ কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন।

পরে সেই ঘটনার তদন্তে নামে বিশেষ তদন্তকারী দল, এসআইটি। তদন্তের পর নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দোষ দাবি করে বিশেষ তদন্তকারী দল। তা নিয়ে আবারো সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী ও সংবাদমাধ্যম। এরপরই এ বিশেষ মন্তব্য করেন কাশ্মির পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেছেন, ‘তদন্ত ঠিকভাবে হয়েছে কি হয়নি, তা নির্ধারণ করবেন আদালত ও বিচারকেরা। রাজনীতিক, সংবাদমাধ্যমের এ ধরনের কোনো অধিকার নেই।