নিজের কর্তৃত্ব পাকাপোক্ত করার উদ্যোগ সাইদের

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ নতুন সংবিধান তৈরি ও রাজনৈতিক সংস্কারে পরামর্শ প্রক্রিয়া চালু করেছেন। এই পরামর্শের ভিত্তিতে নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি হবে। আগামী ২৫ জুলাই সাংবিধানিক গণভোটের পরিকল্পনা করা হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার দেশটির প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। তবে সম্প্রতি বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন ও কারাদণ্ড দেশটিতে নতুন উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। আল জাজিরা।

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ

খবরে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ এ পদক্ষেপের আড়ালে মূলত নিজ কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করতে চাইছেন। ১ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত একটি ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিকদের পরামর্শ পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পরামর্শগুলোর বিষয় হল- নির্বাচনী, অর্থনৈতিক, আর্থিক, সামাজিক, উন্নয়নমূলক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক বিষয়।

২০২১ সালের ২৫ জুলাই কাইস সাইদ ক্ষমতা দখল করেন। প্রাথমিকভাবে নাগরিকরা তাকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু পরে ভঙ্গুর আইনসভার মধ্যে বার বার অচলাবস্থা ঘিরে জনমনে হতাশা তৈরি হয়।

পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ডিক্রি জারি করে নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করেন এবং গত ডিসেম্বরের শুরুতে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনার প্রতিশ্রুতি দেন। দেশটির প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘আপনার মতামত, আমাদের সিদ্ধান্ত’ নামে পরিচিত ইলেক্ট্রনিক প্ল্যাটফরমটি দেশের ২৪টি অঞ্চল জুড়ে যুব কেন্দ্রগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে তা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বলা হচ্ছে, নাগরিকরা বিকল্পভাবে স্থানীয় কমিটিতে তাদের মতামত দিতে সক্ষম হবে, কারণ তিউনিসিয়ার মাত্র ৪৫ শতাংশ বাড়ি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত। সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপটি প্রেসিডেন্ট কাইসের জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরবে।

তবে সাইদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ রয়েছে। তিউনিসিয়ার ভাঙা রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনের জন্য সাইদের মিশন নতুন স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করেছে বলে মনে করেন সমালোচকরা। গত শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, তিউনিসিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী স্থগিত পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় দল এন্নাহদার সিনিয়র নেতা নুরউদ্দিন ভাইরিকে গ্রেপ্তার করেছে।

এই গ্রেপ্তার বিপজ্জনক নজির বলে অভিহিত করা হচ্ছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জননিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি নিয়মের অধীনে তাকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিউনিসিয়ার আদালত গত ২৩ ডিসেম্বর সাবেক রাষ্ট্রপতি মনসেফ মারজুকিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।