জিয়ানের বাসিন্দাদের আদিম যুগে নিয়ে গেছে লকডাউন!

করোনাভাইরাসের কারণে টানা ১৩ দিন লকডাউনে বন্দি হয়ে পড়েছেন চীনের জিয়ান শহরের বাসিন্দারা। এতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি সাহায্য বাড়িবাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা থাকলেও অনেকেই তা পাননি। বাধ্য হয়েই তারা পারিবারিক দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিনিময় করে সংগ্রহ করছেন খাবার। স্মার্টফোন, ট্যাব, সিগারেট, বাঁধাকপি, স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিনিময়ে তাদের খাবার সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

লকডাউনের কারণে চীনে সিগারেট, বাঁধাকপির বিনিময়ে খাবার

বিবিসি জানায়, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ২৩ ডিসেম্বর থেকে লকডাউন চলছে মধ্য চীনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত শাআনশি প্রদেশের রাজধানী জিয়ানে। প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস এই শহরে। টানা লকডাউনে খাদ্য জোগাড় করতে দিশেহারা শহরটির বাসিন্দারা।

খাদ্য ঘাটতিতে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই তারা ফিরে গেছেন আদিযুগের বিনিময় প্রথায়। সাম্প্রতিক সময়ে এমন বেশ কিছু ছবি ও তথ্য উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে দেখা যাচ্ছে, বাঁধাকপির জন্য সিগারেট, আপেলের জন্য থালা, ধোয়ার তরল সবজির ছোট পোঁটলার জন্য স্যানিটারি প্যাড বিনিময় করছেন অসহায় বাসিন্দারা। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, লোকজন তাদের ভবনে থাকা লোকজনের সঙ্গেই বিভিন্ন জিনিস অদলবদল করছেন।

লকডাউনের কারণে চীনে সিগারেট, বাঁধাকপির বিনিময়ে খাবার

ওয়াং নামের এক বাসিন্দা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেছেন, অন্য এক বাসিন্দা চালের জন্য তার স্মার্টফোন এবং ট্যাব দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। অন্য একজন জানিয়েছেন, অসহায় নাগরিকরা বিনিময়ের যুগে পৌঁছেছে। তিনি নিজেই আদিম সমাজে প্রত্যাবর্তন করেছেন প্রয়োজনে বের হতে না পারায়। তুলোর জন্য আলু বিনিময় করেছেন তিনি।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে বাসিন্দাদের খাবার সরবরাহ করছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। শুধু খাবারই নয়, কোভিডের ভয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে শহরটিতে।

সোমবার ভাইরাল হয়েছে একটি পোস্ট। সেখানে শিয়ানের একজন বাসিন্দা দাবি করেছেন, তার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে অসুস্থ লোকটিকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি।