উত্তপ্ত কাজাখস্তানে জরুরি অবস্থা, রুশ হস্তক্ষেপ কামনা

এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে বিক্ষোভে উত্তাল তেলসমৃদ্ধ মধ্য এশীয় দেশ কাজাখস্তান। বিক্ষোভের মুখে ইতোমধ্যে দেশটির সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। উদ্ভূত অবস্থায় দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

উত্তপ্ত কাজাখস্তানে জরুরি অবস্থা, রুশ হস্তক্ষেপ কামনা

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারি, সিএনএন ও আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাজাখস্তান সরকার নতুন বছরের শুরুতে এলপি গ্যাসের ওপর থেকে দাম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তুলে নেয়। এতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ দেশটির অনেক মানুষ খরচ কম পড়ায় তেলের পরিবর্তে তাদের গাড়ি চালাতে এলপি গ্যাস ব্যবহার করেন।

এদিকে, রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম নিউজ ২৪ জানিয়েছে, গতকাল বুধবার, ৫ জানুয়ারি, সারা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় কাজাখস্তানের বৃহত্তম নগরী আলমাতের বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা চলবে বলে জানানো হয়েছে। এই সময়ে যান ও মানুষের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।

উত্তপ্ত কাজাখস্তানে জরুরি অবস্থা, রুশ হস্তক্ষেপ কামনা

আলমাত শহরের এক সাংবাদিক মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-কে জানান, সেখানে ঠিক মতো ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া দেশটির প্রেসিডেন্টের বাসভবন এবং মেয়রের কার্যালয়সহ আশপাশের ভবনগুলোতে আলো জ্বলতে দেখা যায়নি।

অপরদিকে, কাজাখস্তানের প্রেসিডেনশিয়াল ওয়েবসাইটে বুধবার বলা হয়েছে, সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছে প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিনের সরকার। এ ছাড়া দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ।

পরে তোকায়েভ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, দেশের নিরাপত্তা কাউন্সিলের দায়িত্ব নেবেন তিনি। আরেক ভাষণে দেশটির আলমাতে বিমানবন্দরে কথিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে মিত্র দেশগুলোর সহায়তা কামনা করেন। এ ছাড়া তিনি কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন বা সিএসটিও’র প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যে জোটে রয়েছে রাশিয়া, বেলারুশ ও কিরগিজস্তান।

এদিকে, আল জাজিরা জানিয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে রাষ্ট্রীয় ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভ দমনে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সহায়তা চেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে তোকায়েভ বলেন, আমি সিএসটিও-ভুক্ত দেশগুলোর প্রধানদের সহযোগিতা চেয়েছি, যাতে সন্ত্রাসী হামলা ঠেকানো যায়।

তাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদ মাধ্যমে আরো বলা হয়েছে, সারা দেশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৮ পুলিশ কর্মকর্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১৭ জন নিরাপত্তা কর্মী।