রাশিয়ার হুমকি, ফাঁকা আওয়াজ বলল যুক্তরাষ্ট্র

এবার যুক্তরাষ্ট্রের দোরগোড়ায় সেনা মোতায়েনের হুমকি দিল রাশিয়া। তবে মস্কোর এই সেনা মোতায়েনের হুমকিকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। ইউক্রেন সংকট ও ন্যাটোর সামরিক প্রভাব বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে এক শীর্ষ রশ কূটনীতিক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যদি রাশিয়ার দোরগোড়ায় সামরিক তৎপরতা বন্ধ না করে তাহলে তারাও ল্যাটিন আমেরিকার কিউবা ও ভেনিজুয়েলায় সেনা মোতায়েন করবে। ডেইলি সাবাহ, টাইমস অব ইসরায়েল।

উত্তেজনার মধ্যেই রুশ সেনাদের মহড়া

ইউক্রেন ও রাশিয়া সীমান্তে এই মুহূর্তে গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে মস্কো। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যেই আগ্রাসন চালাতে পারে রুশ সেনারা। সেই সম্ভাবনা সামনে রেখে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বাড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমা ব্লক। তবে শুরু থেকেই এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে মস্কো।

এ সংকটের কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে উভয়পক্ষের শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহেও ‘শান্তির শহর’ সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে একটি বৈঠক হয়েছে। তবে আগের মতোই এই বৈঠক থেকেও ইতিবাচক কোনো ফল আসেনি। বৈঠক শেষে উভয়পক্ষই হতাশা প্রকাশ করেছে।

কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর ব্যর্থতায় নতুন করে উত্তেজনা আরও বাড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আবারও হুঁশিয়ারি দেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা যদি রাশিয়ার দোরগোড়ায় তাদের সামরিক তৎপরতা হ্রাস না করে, তাহলে ল্যাটিন আমেরিকায় সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হুঁশিয়ারি উদ্ধৃত করে রুশ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটিভিআইকে এক সাক্ষাৎকারে রিয়াবকভ বলেন, আমাদের প্রস্তুতির সবই নির্ভর করছে মার্কিন পদক্ষেপের ওপর। পশ্চিমা শক্তিগুলো দাবি মানতে ব্যর্থ হলে মস্কো অনির্দিষ্ট ‘সামরিক-প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা’ নিতে পারে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সামরিক মহড়ার প্রসঙ্গ টেনে রিয়াবকভ বলেন, মার্কিন পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম কৌশলগত বোমারু বিমানগুলো রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে উড়েছে। রাশিয়ার ভূখণ্ডের কাছেই মার্কিন ও ন্যাটো সামরিক স্থাপনা ও মহড়াকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল বলে বর্ণনা করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শক্তি পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে ক্রমাগত উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। এতে সামরিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।

রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ওয়াশিংটনে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, আমরা ইউরো-আটলান্টিকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এগিয়ে নিতে আরও কূটনীতি চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। তবে রাশিয়া যদি সেদিকে (ল্যাটিন আমেরিকায় সেনা মোতায়েন) অগ্রসর হয় তবে আমরা এটি কঠিনভাবে মোকাবেলা করব।