শাবিতে সংঘর্ষ, ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় রোববার, ১৬ জানুয়ারি। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে জালালাবাদ থানায় মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে এসআই আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, ফাইল ছবি

বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ওসি আবু খালেদ মামুন জানান, সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়েছে। এটি রুটিন ওয়ার্ক হওয়ায় কারো নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি, গ্রেপ্তারও হয়নি কেউ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে গত রোববার আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে যায় পুলিশ। পরে ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। বিকেলে ভবনটিতে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ জানান উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ।

এ সময় তিনি ভিসিকে সেখান থেকে বের করার চেষ্টা করলে আন্দোলনরত ২০০-৩০০ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী পুলিশের ওপর চড়াও হয়। সরকারি আগ্নোয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ককটেলও ফাটায় শিক্ষার্থীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জানমাল, আগ্নেয়াস্ত্র ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় ১১ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২০ রাউন্ড সিসা বুলেটসহ ৩১ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে পুলিশ। এ ছাড়া সিআরটির ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ভিসিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও প্রশাসনের সঙ্গে সংঘর্ষ, ফাইল ছবি

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই রোববার, ১৬ জানুয়ারি ভিসিকে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

ওই সময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এদিন পুলিশের হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে এবং গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।

আজ মঙ্গলবার ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থী। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত হলে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এক দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো গেটে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তার আগে উপচার্যের কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা দেওয়া হয়। ভিসিকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, পুরো ঘটনার সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে। ভিসি জানান, কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।