আপনি পড়ছেন

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাবির ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত আছে। আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের সামনে মানবপ্রাচীর তৈরি করে বাধা দেওয়ায় খাবার নিয়ে ভেতরে যেতে পারেননি শিক্ষকরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

obstruction to give food to shabi vcশাবি ভিসিকে খাবার দিতে বাধা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ভিসির বাসভবনে খাবার নিয়ে যান। তারা ভবনেরে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাধা দেন, পরে খাবার নিয়েই ফিরে যান তারা।

এ সময় প্রক্টর আলমগীর কবীর বলেন, ভিসির বাসভবনে তার সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা রয়েছেন। গতকাল ভবনটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তারা খিদায় কষ্ট করছেন, অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ভিসি। সে জন্য খাবার, ওষুধ নিয়ে এসেছেন তারা।

ভিসির বাসভবনে অবস্থান করা আরেকজন শিক্ষকও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা তাদের জন্য ওষুধ নিয়ে যেতে চাই, তাদের দেখতে যেতে চাই। প্রয়োজনে যাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি।

এর জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরণ অনশনরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও ভিসির টনক নড়েনি। আমরা এভাবে মারা যাবো আর তিনি বহাল-তবিয়তে থাকবেন, তা হতে পারে না। ঘেরাও কর্মসূচি চলায় ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

shabi students go on hunger strikeশাবি শিক্ষার্থীদের অনশন

ভবনের ভেতরে কেউ অসুস্থ হয়ে থাকলে শিক্ষার্থীরাই চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে জানিয়ে তারা বলেন, খাবারের প্রয়োজন হলেও ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানের কারণে খাবার নিয়েই ফিরে যান শিক্ষকরা।

এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন শিক্ষার্থীরা। পানির সরবরাহ ও জেনারেটরের তেল ফুরিয়ে এসেছে বলে সোমবার বিকালে জানান একজন কর্মচারী। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, শাবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এ আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক লাঠিপেটা করা হয় এবং তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ।

ওই দিন দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সবশেষ ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় পানির সরবরাহ ও জেনারেটরের তেল ফুরিয়ে এসেছে।