আপনি পড়ছেন

উপাচার্য, ভিসি, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের, শাবিপ্রবি, শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তারা।

sust students press conferenceশাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

অনশনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের এই অবস্থা দেখে আমাদের সহযোদ্ধারা অনুরোধ করেন- যেন আমরা অনশন ভেঙে ফেলি। তবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমরা অনশনরত শিক্ষার্থীরা অনশন না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব এবং চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।

এদিকে, সংবাদ সম্মেলন থেকে শাবির সাবেক ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করার নিন্দা জানানো হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা এবং খাবার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহ করছিলেন তারা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে সিলেটে পাঠানো হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে কোনো প্রয়োজনে আমরা আমাদের বড় ভাইদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে থাকি। তারা আমাদের মৌলিক প্রয়োজন চিকিৎসা ও খাদ্য সংগ্রহের জন্য সহযোগিতা করেছেন, সেটা তো অন্যায় কিছু নয়। বড় ভাইদের আটকের নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। সেইসঙ্গে তাদের দ্রুত মুক্তির দাবি করছি।

প্রসঙ্গত, এর আগে চলমান আন্দোলনের নেতা মোহাইমিনুল বাশার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের সহযোদ্ধাদের কষ্ট আমরা আর মেনে নিতে পারছি না। চোখের সামনে তাদের আমরা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চাই না। তাই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই অনশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। তবে অনশন ভাঙা হলেও ব্যাপক উদ্দীপনার সঙ্গেই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি থেকে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে তার পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শ শিক্ষার্থী। ওই আন্দোলনে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ হামলা চালালে তা নতুন মাত্রা পায়। এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গত ১৫ জানুয়ারি ভিসিকে ক্যাম্পাসের একটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন।

ওই দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ডাকা হয়। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বেশ কিছু আহত হন। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানেননি শিক্ষার্থীরা। উল্টো গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ভিসির পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে তার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। এরপর দাবি আদায়ে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অন্তত ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তির কথা জানা যায়।