আপনি পড়ছেন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালে হলে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের সেখানকার নেতাকর্মীরা। ওই হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০ জনের ফাঁসি ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। এবার একই স্টাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির একটি হলে এক ছাত্রকে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

du logoঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী আকতার হোসেনকে গত বুধবার রাতে ডেকে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন সংগঠনটির ৬ কর্মী।

ভুক্তভোগী আজ বৃহস্পতিবার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। এ তথ্য নিশ্চিত করে আকতার জানান, নির্যাতনের এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

bsl logo black 1ছাত্রলীগের লোগো

অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মীরা হলেন- সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র কামরুজ্জামান রাজু, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সাইফুল ইসলাম, লোকপ্রশাসনের সাইফুল ইসলাম রোহান, ইতিহাসের হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণের ইয়ামিন ইসলাম ও মনোবিজ্ঞানের ওমর ফারুক শুভ। তারা সকলে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মীর পাশাপাশি পদ প্রত্যাশী আবু ইউনুস ও রবিউল ইসলাম রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এই দুই নেতা ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।

জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় গেস্টরুমে ডাকা হয় আখতারসহ কয়েকজনকে। অসুস্থ থাকায় তিনি না আসায় তাকে ডেকে পাঠানো হয়। এবার আসলে গেস্টরুমে না আসার কারণ জানতে চান অভিযুক্তরা। এ সময় অসুস্থতার কথা জানালে ‘কিসের অসুস্থ, বিকালেও বাইরে দেখেছি বলে ধমক দেন তারা। পরে লাইটের দিকে আধা ঘণ্টা তাকিয়ে থাকার ‘শাস্তি’ দেওয়া হয় আখতারকে।

কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন আখতার, এ সময় সহপাঠীদের সহায়তায় নেওয়া হয় গণরুমে। সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়লে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালে পাঠানো হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ইসিজি, করোনা পরীক্ষা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হলে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

অভিযোগের বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এতে অভিযোগের প্রমাণ মিললে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।

ঘটনাটি জেনেছেন জানিয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কেউ অপরাধ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।