মার্কিন প্রতিবেদন: কাবুল বিমানবন্দরে হামলা প্রতিরোধের উপায় ছিল না!

গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা ও নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার সময় আত্মঘাতী হামলার সামরিক তদন্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তদন্তকারীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ওই হামলা প্রতিরোধ করার কোনো উপায় ছিল না। হামলায় ১৭০ জনের বেশি আফগান ও ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য নিহত হয়। ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে অ্যাবে গেটে হামলা চালানোর জন্য হামলাকারী ২০ পাউন্ডের বিস্ফোরক বহন করছিল। তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সেই বিস্ফোরণ, ফাইল ছবি

গতকাল শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সামরিক কর্মকর্তারা বোমা হামলার সূক্ষ্মাতি-সূক্ষ্ম বিতরণ তুলে ধরেন। তাতে বলা হয়, হামলায় ১১ মার্কিন মেরিন, একজন নাবিক ও একজন সৈনিক নিহত হয়, যারা তালেবান দখলের পর দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার আফগান নাগরিকের সাথে ফ্লাইটে উঠার চেষ্টা করছিল।

কর্মকর্তারা বলেছেন, মূল কথা হল- যারা মারা গেছে তাদের ক্ষত ছিল ‌'এত বিপর্যয়কর' যা তারা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আগে ধারণা করা হয়েছিল, এটি বন্দুকযুদ্ধের সাথে জড়িত একটি জটিল হামলা। মূলত এ ধারণা ছিল ভিত্তিহীন। পরে আত্মঘাতি হামলার দায় স্বীকার করেছিল আইএসের স্থানীয় শাখা।

মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলছেন, একটি বিস্ফোরক যন্ত্র এতগুলো পুরুষ ও নারীকে হত্যা করেছে। এই ডিভাইসের ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতি শক্তি এত বেশি ছিল যে, ৫৮ মার্কিন সেনার শরীর সর্বজনীন বর্ম এবং হেলমেট দিয়ে মুড়ে দেয়া সত্ত্বেও তারা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। বিপর্যয়কর আঘাতগুলো ১৩ সেনার প্রাণ কেড়ে নেয়।

তদন্তকারীরা বলেছেন, হামলাকারী সম্ভবত তালেবান এবং অন্যান্য নিরাপত্তা চেকপয়েন্টগুলোকে বাইপাস করে গেটের কাছে পৌঁছেছিল। মনে হচ্ছে, তালেবানরা হামলার বিষয়ে জানত না। নিরাপত্তা সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, কিন্তু সম্ভাব্য হামলার সময় নির্দিষ্ট ছিল না। তদন্তের নেতৃত্বদানকারী জেনারেল ল্যান্স কার্টিস বলেছেন, কাবুলে সামরিক নেতারা যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করেছিলেন। এরপরও বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়।

সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, বিস্ফোরণের পর হামলাকারীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনাদের গুলি চালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বন্দুকের গুলিতে কেউ নিহত বা আহত হয়নি।

শুক্রবারের ব্রিফিং এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে। সামরিক কর্মকর্তারা ঘটনার দিন নিহত সৈন্যদের পরিবারকে যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, বর্ণনার সঙ্গে তার মিল রয়েছে। তদন্তকারীদের হাতে হামলার সময় গেটে বিশৃঙ্খলার বেশ কিছু ভিডিও রয়েছে।