জান্তাকে পর্যুদস্ত করতে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নতুন কৌশল!

এবার মিয়ানমার জান্তাবাহিনীর সদস্যদের বাড়ি বাড়ি হামলার ছক তৈরি করছে। স্থানীয়ভাবে স্থলপথে প্রতিরোধবুহ্য তৈরি করে কাজ না হওয়ায় তারা নতুন এ পরিকল্পনা করেছে। বিভিন্ন অঞ্চলের বাড়িঘরে বিমান হামলা চালিয়ে কয়েক ডজন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী, হাজার হাজার মানুষকে করেছে ঘরছাড়া। তাই এবার আর প্রতিরোধ নয়, প্রতিশোধ নেবে প্রতিরোধযোদ্ধারা।

বাড়ি বাড়ি হামলার ছক জান্তাবাহিনীর!

হামলাকারী জান্তার ওইসব বিমানের পাইলটদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলার ছক কষেছে ইয়াঙ্গুনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৪৫ জন পাইলট ও কর্মকর্তার নাম-ঠিকানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। খবর দ্য ইরাবতী।

গত বছরের মার্চের শেষ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাচিন, শান, চিন, কায়াহ, কারেন এবং বাগো, সাগাইং, ম্যাগওয়েসহ আটটি অঞ্চল ও রাজ্যে হেলিকপ্টার গানশিপ এবং জেট ফাইটারসহ ১০০ টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়ে রেকর্ড করেছে জান্তা। সরকার গত মাসে কায়াহ রাজ্যের এইচপ্রুসোতে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্যাম্পেও বোমা হামলা করেছে।

বিশেষ করে সাগাইং অঞ্চল, কায়াহ, কারেন এবং চিন রাজ্যে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স বা পিডিএফ গ্রুপ এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করে জান্তাদের বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে বহু বাড়িঘর আর গ্রামের পর গ্রাম। ইয়াঙ্গুনের সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এরই মধ্যে প্রতিশোধপর্বের ‘অ্যাকশন’ শুরু হয়ে গেছে।

সোমবার ইয়াঙ্গুনের দক্ষিণ দাগন শহরে বিমানবাহিনীর ক্যাপ্টেন পাই ফিয়ো কিয়ার বাড়িতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে। গত সপ্তাহে কর্নেলের মতো সিনিয়র অফিসারদের বাড়িতে অন্তত চারটি গ্রেনেড হামলা হয়েছে। ওই হামলার পর ওয়ার্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, হামলার কারণে বিমানবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা গোপনে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন।

এদিকে, মঙ্গলবার সাগাইং এবং বাগো অঞ্চলে জনগণের পিপলস ডিফেন্স ফোর্স, পিডিএফ, অতর্কিত হামলায় প্রায় ৩৫ জান্তা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিরোধযোদ্ধাদের এক প্রতিনিধি। এর আগে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিনে প্রায় ৩০০ জান্তা সদস্যকে হত্যার দাবি করেছিল সংগঠনটি।

প্রতিরোধ যোদ্ধারা জানায়, মঙ্গলবার বিকালে প্যালেতে সাতটি বহরে অতর্কিত হামলা চালায় তারা। এ সময় ২২ জান্তা প্রাণ হারায়। সাগাইং অঞ্চলের ইনমাবিন শহরের টাউনশিপের সশস্ত্র গ্রুপগুলো দাবি করেছে, তারা ওই হামলায় ৪১টি মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। হামলায় অংশ নেওয়া চিন্ডউইন গ্যালোন ইয়ারজার গেরিলা ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, দুটি সামরিক যান উল্টে গেছে এবং আরেকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে আরও তিনটি পিডিএফ সাগাইং অঞ্চলের খিন ইউ টাউনশিপের মা দাউংগি গ্রামে অভিযান চালানোর চেষ্টাকারী সৈন্যদের আক্রমণ করেছিল স্থানীয় ওল্ফ গেরিলা বিপ্লবী বাহিনী। তাদের ওই অতর্কিত হামলায় অন্তত ছয় জান্তা নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়। মঙ্গলবার সাগাইংয়ের শ্বেবো টাউনশিপে অবস্থিত পাঁচটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী থিলোন গ্রামে পাঁচবার জান্তাবাহিনীর ওপর ড্রোন হামলা চালায়।