আপনি পড়ছেন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ ২৫ দিন পর নিজ কার্যালয়ে ফিরলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাবিপ্রবির ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিপেটাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ হিসেবে বর্ণনা করে ২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

vc farid uddin ahmedফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ফাইল ছবি

আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বলেন, ১৬ জানুয়ারির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ভিসি। ওইদিন আইসিটি ভবনের সামনে পুলিশি হামলার মুখে পড়ার পর ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

প্রশাসন সূত্রমতে, শুক্রবার সন্ধ্যায় শাবিপ্রবিতে গিয়ে ভিসির কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এতে ভিসি, ডিন, বিভাগের প্রধান, সিনিয়র শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে ১৬ জানুয়ারির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিতে বলা হয় ভিসিকে।

shahjalal universt police charged batton innerউত্তাল শাবি, পুলিশের লাঠিচার্জ-গুলি, ফাইল ছবি

সে অনুযায়ী আজ এক বিবৃতিতে ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ আহতদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ওই ঘটনার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।

ওই ঘটনার জেরে সৃষ্ট অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সকলে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলা হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর পরিবেশ এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলটির ছাত্রীরা। পরে গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এরপর আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয় এবং পুরো ক্যাম্পাসে তা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসন পুলিশ ডাকলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি শটগান, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

ওই দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। এরপর থেকে ভিসি তার বাসভবনেই ছিলেন।