খায়রুজ্জামানের প্রত্যর্পণে মালয়েশিয়ার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
- Details
- by প্রবাস
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গত ৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। বাংলাদেশের অনুরোধে তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে কুয়ালালামপুর। যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশে ফেরত আনার কথাও জানায় ঢাকা। তবে খায়রুজ্জামানকে হস্তান্তরের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয় কুয়ালালামপুরের একটি আদালত।
এবার এম খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট। তার স্ত্রী রিটা রহমানের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার অন্তর্ববর্তীকালীন এ আদেশ দেয়া হয়। এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
তাতে বলা হয়, খায়রুজ্জামানের পক্ষে আইজীবীর করা ‘হেবিয়াস করপাস রিট’ এর ওপর আগামী ২০ মে শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান। রিটে বলা হয়েছে, ইউএনএইচসিআরের কার্ডধারী খায়রুজ্জামান রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী। অভিবাসন আইন লঙ্ঘন না করার পরও তাকে আটকে রাখা বেআইনি।
কোনো ব্যক্তিকে ‘বেআইনিভাবে’ আটকের অভিযোগ আসলে আদালতের সামনে হাজির করতে এ ধরনের রিট মামলা করা হয়। গত বছর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল কুয়ালালামপুর। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে খায়রুজ্জামানের ক্ষেত্রে তেমনটি যাতে হয়, সে বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী এডমুন্ড বন।
এ সময় বিচারক বলেন, আদালতের আদেশের পরেও খায়রুজ্জামানকে ঢাকার কাছে ফেরত পাঠানোর মতো কিছু শুনতে চাই না। ইমিগ্রেশন বিভাগ বিষয়গুলো নিজেদের কাঁধে তুলে নেবে না বলে আশা করি। পরে বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে যোগাযোগ করবেন বলে জানান ইমিগ্রেশন বিভাগের আইনজীবী উওং সিউ মুন।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর এম খায়রুজ্জামান ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কুয়ালালামপুরে ঢাকার হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। এ ছাড়া মিশর, ফিলিপাইন ও মিয়ানমারেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কুয়ালালামপুরে অবস্থান করা এই বাংলাদেশিকে স্থানীয় আম্পাং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, এম খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করে এবং দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি দেশে না ফিরে সেখানে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর মিশর ও ফিলিপাইনে বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর তাকে অবসরে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ২০০৩ সালে আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান এম খায়রুজ্জামান। এরপর ২০০৫ সালে তাকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর