টাইটানিকের মতো ডুবছে ব্রাজিলের বিনোদন নগরী!

আতাফোনা, ব্রাজিলের অন্যতম বিনোদন শহর। জলবায়ু পরিবর্তনের খাড়ায় পড়েছে আমাজন বন উজাড়ের জন্য দায়ী দেশ ব্রাজিল। একই কারণে সাগরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শহরটি। টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার মতো ধীরে ধীরে একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে শহরটি। সমুদ্রে ধ্বংস হওয়া সর্বশেষ ঘরগুলো টিকে আছে বিনা-লড়াইয়ে। সেগুলোর ওপর দিয়ে শকুনগুলোর ওড়াউড়ি এক সর্বনাশা ছবির জন্ম দিয়েছে। এএফপি।

টাইটানিকের মতো ডুবছে ব্রাজিলের ‘বিনোদন নগরী’!

আটলান্টিক মহাসাগর সংলগ্ন রিও ডি জেনেরিওর উত্তরে এই ছোট্ট শহরে বছরে গড়ে ছয় মিটার (প্রায় ২০ ফুট) করে বেড়েছে সমুদ্রের অগ্রসরতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেই প্রবণতা আরও বেগবান হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৫০০টিরও বেশি ঘর সাগরে তলিয়ে গেছে। এক সময়ের সুন্দর সুসজ্জিত উপকূলরেখার ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোটি এখন যেন এক ডুবো কবরস্থান।

এখানে এখনো রয়ে গেছেন কয়েকজন স্থানীয়। তাদেরই একজন জোয়াও ওয়াকেড পেগজোটো হেঁটে যাচ্ছিলেন জড়ো করা ধ্বংসস্তূপের ওপর দিয়েই। বললেন, আমাদের কখন চলে যেতে হবে? জানি না, তবে যেতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে সমুদ্র তিন বা চার মিটার অগ্রসর হয়েছে। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের দেওয়ালটি না-ও টিকতে পারে।

জোয়াওর বাড়ির সামনে রয়েছে সুদৃশ্য একটি বাগান। তার দাদা অবকাশযাপনের জন্য বাড়িটি বানিয়েছিলেন। করোনার কঠিন দিনগুলো পার করলেও এখন এ বাড়ির মায়া পরিত্যাগ করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘বাড়িটি হারানো আমার জন্য অপমানজনক। এতে আমার পরিবারের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।

প্রায় ৬ হাজার মানুষের শহর এই আতাফোনা। ফ্লুমিনেন্স ফেডারেল ইউনিভার্সিটির ভূতাত্ত্বিক এডুয়ার্ডো বুলহোস জানিয়েছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সমস্যাটি আরও বেড়ে চলেছে। যার ফলে সমুদ্রের স্তর বাড়ছে এবং স্রোত ও আবহাওয়ার ধরনকে আরও চরমভাবাপন্ন করছে। এই প্রক্রিয়া চলেছে ৪০ বছর ধরেই। কম বালির কারণে ভাঙনের কবলে পড়ে শহরটি টিকতে ব্যর্থ হয়েছে। বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শহরটির পর্যটন ও মৎস্যশিল্প।

২০৫০ সালের মধ্যে মার্কিন উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ১ ফুট। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মার্কিন উপকূলরেখায় ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক ফুট (৩০ সেন্টিমিটার) পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার মার্কিন সরকারের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২০১৭ সালের একটি প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন আপডেট করে গবেষকরা জানান, কীভাবে জোয়ার, বাতাস এবং ঝড়চালিত জলের স্তর বর্তমান ও ভবিষ্যতের বন্যার ঝুঁকিকে প্রভাবিত করে সে ধারণা দেয়। ১১১ পৃষ্ঠার সমীক্ষায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, উপকূলরেখা বরাবর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২০২০-২০৫০ এর মধ্যে ১০-১২ ইঞ্চি বাড়বে, যা ১৯২০-২০২০ এর আগের ১০০ বছরের তুলনায় অনেক বেশি।