বিয়ে বাড়িতে কুয়ায় পড়ে ১৩ জনের মৃত্যু

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশে বিয়ের অনুষ্ঠানে কূপে পড়ে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশ নারী এবং শিশু। তারা কূপের মুখে একটি ধাতব স্ল্যাবের ওপর বসে ছিল। তখন স্লাবটি তাদের ওজন বেশি হওয়ায় ধসে পড়ে। বিবিসি।

ভারতের উত্তর প্রদেশে বিয়ে বাড়িতে কুয়ায় পড়ে ১৩ জনের মৃত্যু

কুশিনগর জেলার এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে অভিহিত করেছেন। ঐতিহ্যবাহী ‘হলদি’ অনুষ্ঠানের সময় বুধবার সন্ধ্যায় এই ট্র্যাজেডি ঘটে। হলদি অনুষ্ঠানে আত্মীয়রা সমৃদ্ধির চিহ্ন হিসেবে বর ও কনের মুখে হলুদ মাখিয়ে দেয়।

স্ল্যাব ভেঙে গেলে অন্যান্য অতিথিরা আহতদের উদ্ধার করে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যান। ১১ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হলেও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জেলা কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে সাহায্য করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

ঘটনা-দুর্ঘটনায় নানা কারণে নজরে পড়ে ভারতের উত্তর প্রদেশ। ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন অনুসারে, উত্তর প্রদেশ এনকাউন্টার হত্যা এবং হেফাজতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। ২০১৪ সালে দেশটিতে রেকর্ড করা মোট ১ হাজার ৫৩০টি মৃত্যুর মধ্যে রাজ্যটিতে ৩৬৫টি বিচারিক মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে।

কমিশন জানিয়েছে, ২০১৬ সালে দেশটিতে নিবন্ধিত ৩০ হাজারের বেশি খুনের মধ্যে উত্তর প্রদেশেই ছিল ৪ হাজার ৮৮৯টি। বেরেলিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক হেফাজতে মৃত্যুর রেকর্ড হয়। এরপর রয়েছে আগ্রা (২১), এলাহাবাদ (১৯) এবং বারাণসী (৯)।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো জানায়, ভারতের যেকোনো রাজ্যের মধ্যে উত্তর প্রদেশে অপরাধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, কিন্তু জনসংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে প্রকৃত মাথাপিছু অপরাধের হার কম। রাজ্যটি সর্বাধিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাসহ রাজ্যগুলির তালিকার শীর্ষে রয়েছে৷

২০১৪ সালে ভারতে সমস্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ২৩ শতাংশ ঘটনা ছিল উত্তর প্রদেশে। স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার গবেষণা অনুসারে, উত্তর প্রদেশ ২৭ বছরেও মানব উন্নয়ন সূচক উন্নত করতে ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্যটিতে মানব উন্নয়ন সূচক খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর প্রদেশ পুলিশ বাহিনী বিশ্বের বৃহত্তম পুলিশ বাহিনী, যা স্বরাষ্ট্র বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।