ট্রুডোকে ইলন মাস্কের টুইটে তোলপাড়

ট্রুডোকে নাৎসি নেতা এডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে টুইট করে হইচই ফেলে দিয়েছেন মার্কিন ধনকুবের টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। কানাডায় ভ্যাকসিনবিরোধী বিক্ষোভ চলছে ১৯ দিন ধরে। আন্দোলনে অচল রাজধানী অটোয়া। জনগণের ভোগান্তি এড়াতে সোমবার জরুরি আইনের আশ্রয় নেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ প্রসঙ্গেই ওই টুইট। তবে মাস্ক তা আবার মুছে দিয়েছেন। এদিকে ট্রাকচালকদের আন্দোলনে পঙ্গু হওয়া শহরে অটোয়ার সমালোচিত পুলিশপ্রধান পদত্যাগ করেছেন। দি গার্ডিয়ান।

ইলন মাস্ক ও ট্রুডো

বুধবার রাতে হিটলারের ছবি দিয়ে টুইটারে একটি মিম পোস্ট করেছিলেন ইলন মাস্ক। সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার দুপুরে তা সরিয়ে নেন। যদিও টুইটটি কেন সরিয়েছেন সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি। এমনকি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হননি। মাস্কের ওই পোস্টটিকে ‘জঘন্য’ বলে আখ্যা দিয়েছে কানাডা। আমেরিকান ইহুদি কমিটি তাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। টুইটারে অনেকে ইলন মাস্ককে ‘নির্বোধ’ বলে সমালোচনা করেছেন।

বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে পণ্য আনা-নেওয়া করা সব ট্রাকচালকের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে কানাডা প্রশাসন। নিয়ম করা হয়, টিকা না নিলে দেশে ফেরার পর ট্রাকচালকদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এই নিয়মের বিরুদ্ধে ট্রাক নিয়ে প্রতিবাদে নামে চালকরা।

পরে তা কানাডার সব কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলন তৃতীয় সপ্তাহে গড়ালে ১৯৮৮ সালে পাশ হওয়া জরুরি আইন ব্যবহারের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এ আইনে আদালতের আদেশ ছাড়াই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের আটক ও জরিমানা, ব্যাংক হিসাব জব্দ ও বিমা স্থগিত করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

ঠিক এ সময়ই এলো মাস্কের সেই টুইট। হিটলারের একটি ছবির মিম তিনি টুইটারে পোস্ট করেন, যেখানে মাথার ওপরে লেখা ছিল, ‘আমাকে জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে তুলনা বন্ধ করুন’। আর নিচে লেখা ছিল ‘আমার একটা বাজেট ছিল।’

তবে মাস্কের টুইটের সমালোচনা করে জার্মানির অশিৎজ মিউজিয়াম লিখেছে, ‘স্বৈরশাসকের ছবি ব্যবহার করা শোষণমূলক এবং সব ভুক্তভোগীর স্মৃতিকে অসম্মান করা। যা অনেক মানুষকে আঘাত করে।’ আমেরিকান ইহুদি কমিটি বলেছে, ধনকুবেরের টুইটটি অগ্রহণযোগ্য এবং তাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

এদিকে চলমান আন্দোলন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে সমালোচিত অটোয়া পুলিশপ্রধান পিটার স্ললির পদত্যাগ নিশ্চিত করেছে অটোয়া পুলিশ সার্ভিসেস বোর্ড। মঙ্গলবার এক জনসভায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন তারা। টুইটারে একটি বিবৃতিতে স্ললি তার পুলিশিং রেকর্ড রক্ষা করেছেন এবং বলেছেন তিনি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পদত্যাগ করেছেন।

তিনি লিখেছেন, এই বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে, আমি এই শহরটিকে নিরাপদ রাখতে এবং এই অভূতপূর্ব এবং অপ্রত্যাশিত সংকটের অবসান ঘটাতে সম্ভাব্য সবকিছু করেছি। কানাডিয়ান সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় স্ললি টরন্টো পুলিশে যোগদানের তিন দশকেরও বেশি সময় পর ২০১৯ সালে অটোয়া পুলিশ সার্ভিসের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।