অপ্রীতিকর ঘটনা, পিএসএল ছাড়লেন ফকনার

পাকিস্তান সুপার লিগ, পিএসএলের মাঝে ঘটে গেল অপ্রীতিকর ঘটনা। চুক্তির ধারা অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দেয়ায় পিএসএল ছেড়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার জেমন ফকনার। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, পিসিবি-কে দোষারোপ করেছেন অস্ট্রেলিয়ান এ অলরাউন্ডার। মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার জেমন ফকনার

পিসিবি ও ফকনারের দল কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স অবশ্য এ অস্ট্রেলিয়ানের অভিযোগকে পুরোই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। তারা ফকনারের বিরুদ্ধে টিম হোটেলে ঝাড়বাতি ভাঙা এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছে। এমনকি আগামীতে পিএসএলের ড্রাফটে তাকে রাখা হবে না বলেও জানিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ৩১ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার সবশেষ তিন ম্যাচে কোয়েটার হয়ে খেলেননি। পারিশ্রমিক নিয়ে দলটির সঙ্গে দেন দরবার চলছিল তার। শুক্রবার পরিস্থিতি খুব উত্তপ্ত হয়ে হয়ে পড়ে। দলের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ফকনারের। তখন হোটেলের লবি থেকে ব্যাট ও হেলমেট ছোড়েন তিনি। যা হোটেলের ঝাড়বাতিতে আছড়ে পড়ে। ভেঙে যায় ঝাড়বাতি। পরে নাকি বিমানবন্দরেও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন ফকনার।

টুইটারে ঘটনার পুরোটা তুলে ধরেছেন তিনি। পিসিবি ও পিএসএলের আচরণকে ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেন এই অস্ট্রেলিয়ান। একই সঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করেন পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে।

ফকনার লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের ক্রিকেট ভক্তদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শেষ দুই ম্যাচ থেকে আমাকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে। আমার পারিশ্রমিকের ব্যাপারে যে চুক্তি হয়েছিল, পিসিবি তা সম্মান করেনি। আমি পুরো আসর খেলার জন্যই এসেছিলাম। কিন্তু তারা ক্রমাগত মিথ্যা বলে গেছে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ছেড়ে আসতে কষ্ট হয়েছে। পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম আমি। দেশটিতে অনেক তরুণ প্রতিভা আছে, সমর্থকরাও দারুণ। কিন্তু পিসিবি ও পিএসএল থেকে আমি যে আচরণ পেয়েছি, তা খুবই হতাশার। আমি নিশ্চিত, সবাই আমার অবস্থান বুঝতে পেরেছেন।’

ফকনারের দাবি, তার পারিশ্রমিকের ৭০ ভাগ পরিশোধ করা হয়নি। যদিও পিসিবি ও কোয়েটার দাবি, ফকনারের এজেন্টের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানো হয়। কিন্তু দুইবার অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করেছে তার এজেন্ট। যার কারণে প্রথম অ্যাকাউন্টে পাঠানো অর্থ ফেরত আসার আগে ৭০ ভাগ পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত ফকনার বাকি ৩০ ভাগ বা পুরো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন কি না নিশ্চিত নয়।

পিসিবির দাবি, কখনোই পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা হয়নি পিএসএলে। প্রথমে ফকনারের জন্য একটি অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠানো হয়। সেটি যুক্তরাজ্যের। পরে ফকনার আবারও অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠাতে চাপ দেন। যার ফলে তাকে দুইবার অর্থ দিতে হতো। এবং তা না হলে পিএসএলে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানান ফকনার।

দুইবার একই পরিমাণ অর্থ ফকনারের দুটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো সম্ভব নয়, তা তাকে জানিয়েছিল কোয়েটা কর্তৃপক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি টেস্ট, ৬৯ ওয়ানডে ও ২৪ টি-টোয়েন্টি খেলা ফকনার হোটেলের সম্পদ নষ্ট করেছেন।

এবারের আসরে কোয়েটার হয়ে ৬ ম্যাচে ৬ উইকেট নেয়ার সঙ্গে ব্যাটিংয়ে ৪৯ রান করেন অস্ট্রেলিয়ার এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।