দুই লাখ আফগান শিক্ষকের বেতন দেবে ইউনিসেফ

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) প্রায় দুই লাখ সরকারি স্কুল শিক্ষককে প্রতি মাসে ১০০ ডলার করে বেতন দেবে। ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার এ কথা জানিয়েছে। খবর তোলো নিউজের।

গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন একজন আফগান শিক্ষক

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৪০ হাজারেরও বেশি স্কুল শিক্ষক জাতিসংঘের দেওয়া দুই মাসের বেতন পেয়েছেন এবং বাকি শিক্ষকদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেতন হিসেবে উল্লিখিত অর্থ দেওয়া হবে। ইউনিসেফের পরিকল্পনাটি আপাতত দুই মাসের হলেও এর মেয়াদ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আজিজ আহমেদ রিয়ান বলেন, বেতন হিসেবে ইউনিসেফ শিক্ষকদের ১০০ ডলার করে দিচ্ছে। তবে যে সকল শিক্ষকের বেতন ১০০ ডলারের বেশি, তাদের বাকি অংশটুকু মন্ত্রণালয় থেকে প্রদান করা হবে।

বেতনের দাবিতে আফগান শিক্ষকদের মানববন্ধন

আফগানিস্তানে আগে থেকেই শিক্ষকদের বেতন খুবই কম। ২৮ বছর ধরে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ৪৮ বছর বয়সী হামিরা জানান, তিনি অসুস্থ কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসকদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমার অনেক সমস্যা। আয় থেকে আমি ঘরের ভাড়া ও সংসারের খরচ মেটাতাম। কিন্তু এখন আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমার আত্মীয়ের বাসায় তাদের রান্নাঘরে থাকি।

গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর অনেক সরকারি কর্মচারীর বেতন আটকে যায়। কারণ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭০০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো আটকে দেয়। ফলে খুব দ্রুত অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হয় আফগানিস্তান। বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ।

এ অবস্থায় মানবিক বিপর্যয় এড়াতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সরকারি দপ্তরের মাধ্যমে তহবিল সরবরাহ না করে সরাসরি সরকারি কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে চেয়েছে। কারিমা নামের একজন শিক্ষক বলেন, আমি ইউনিসেফ কর্তৃক শিক্ষকদের জন্য ১০০ ডলার করে দেয়ার কথা শুনেছি। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষক বলেন, আমি পারিবারিক খরচের জন্য একজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ আফগান রুপি ঋণ নিয়েছিলাম। আমার সন্তান দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল। তার চিকিৎসা করার জন্য আমার কাছে টাকা না থাকায় ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানায়, মানবিক সংস্থাগুলোকে বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন দেওয়াসহ আফগানিস্তানে চলমান সংকট রোধে তহবিল প্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।