রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি শুরু

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিধন করার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর দমন-পীড়ন ও গুম-খুন করার প্রতিবাদে দেশটির বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আইসিজে-তে মামলা করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মামলার শুনানি চলবে।

রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি শুরু, ফাইল ছবি

এর আগে ২০১৯ সালে এই শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন মিয়ানমারের তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর তথা সরকার প্রধান অং সান সু চি। কিন্তু সেনাবাহিনী তার সরকারকে উৎখাত করায় এবং বর্তমানে কারাগারে থাকায় এদিনের শুনানিতে উপস্থিত নেই সু চি।

জানা গেছে, এবার শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নিচ্ছেন দেশটির আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক মন্ত্রী কো কো লায়িং এবং অ্যাটর্নি জেনারেল থিদা। তবে তারাও আবার ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নেবেন। কারণ গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর এই দুই জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো দমন-পীড়ন, ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে করা মামলায় ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। গাম্বিয়াকে মামলাটি করতে সহায়তা করেছিল ৫৭টি মুসলিম প্রধান দেশের জোট অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসি।

মিয়ানমারের আর্মি ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে দেশটির রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান চালায়। এতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা হতাহত হন। ওই সময় জীবন বাঁচাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে চলে আসে। পরে বাংলাদেশ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়।

জাতিসংঘের নিরপেক্ষ তদন্ত দল পরবর্তীতে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী জাতিগত নিধন অভিযানের অংশ হিসেবেই রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায়। ওই সময় দেশটির ক্ষমতায় ছিল সু চির দল এনএলডি। আর দেশটির স্টেট কাউন্সিলর তথা কার্যত সরকার প্রধান ছিলেন বর্তমানে জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা অং সান সু চি। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করার পাশাপাশি মামলা খারিজ চেয়েছিলেন মিয়ানমারের তৎকালীন নেতা সু চি।