ঘুষ: ডিআইজি মিজানের ৩ ও দুদকের বাছিরের ৮ বছর সাজা

চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমানকে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম দণ্ডবিধির ১৬৫ ধারায় এ সাজা দেন।

ডিআইজি মিজান ও দুদকের বাছির

অপরদিকে, একই মামলায় একই আদালত দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া মুদ্রা পাচার আইনে তাকে ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৮০ লাখ জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অবশ্য দুই ধারার সাজা একসঙ্গে খাটার কারণে সব মিলিয়ে বাছিরকে ৫ বছর জেলে থাকতে হবে। উভয়ের ক্ষেত্রেই হাজতবাসের সময় বাদ যাবে।

এর আগে আজ বুধবার বেলা ১১টার পর উভয় আসামিকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এর মধ্যে বাছিরকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মিজানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মিজানের বিরুদ্ধে এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতনের অভিযোগে উঠায় ২০১৯ সালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর ৪ মাস পর মিজানের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এক হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব পান সংস্থাটির তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছির।

অনুসন্ধান চলাকালে ডিআইজি মিজান দাবি করেন, দুদক কর্মকর্তা বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এ বিষয়ে তাদের মধ্যে যে কথোপকথন হয়, তার কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেন মিজান। ওই অডিও প্রচারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। যদিও সেটাকে বানোয়াট বলে দাবি করেন বাছির।

এরপর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই মামলা করেন। পরে তিনি অভিযোগপত্র দেন। অভিযোপত্রে জানানো হয়, অবৈধভাবে সুযোগ প্রদানের হীন উদ্দেশ্যে ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠার পর তাদের দুই জনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর দুদকের একটি দল ২০২০ বছরের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে। আরেক মামলায় গ্রেপ্তার ছিলেন ডিআইজি মিজান। পরে তাকেও এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে গত বছরের ১৮ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। যা শেষ হয় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৭ সাক্ষীর মধ্যে আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য শোনেন।