নিহত ৮: মার্শাল ল জারি, কিয়েভ ছাড়ছে মানুষ

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেশ কিছু দিন ধরে চলা উত্তেজনার মধ্যেই নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ইউক্রেনে সামরিক হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনে অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাল্টা হিসেবে ইউক্রেনও রাশিয়ায় হামলা করছে বলে দাবি করেছে।

কিয়েভ ছাড়ছে মানুষ

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ব্রিটিশ বার্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আকাশ পথ এবং ভূমিতে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। আগ্রাসী রুশ বাহিনীর গোলা হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছেন।

খবরে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বে রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপ থেকে রুশ সাঁজোয়াযান ঢুকছে ইউক্রেনে। ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া খারকিভ, লুহানস্ক ও শেরনিহিভ এলাকা দিয়েও রাশিয়া স্থলবাহিনীর বহর ইউক্রেনের সীমানায় ঢুকে যাচ্ছে।

ইউক্রেনে ঢুকছে রাশিয়ান ট্যাঙ্ক

এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি দেশজুড়ে মার্শাল ল জারি করেছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয়ের শপথও করেছেন জেলেনস্কি।

তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর রাশিয়া হামলা শুরু করেছে। তাদের আগ্রাসন রুখতে দেশের মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে বরং রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেওয়ার পর ওই ভিডিও বার্তা দেন জেলেনস্কি।

অপরদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত দেশটির সামরিক সদরদপ্তরে চালিয়েছে রাশিয়া। পুতিনের সামরিক বাহিনীর হামলায় কিয়েভে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় শহর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাতে শুরু করেছে মানুষ।

বিবিসি বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে প্রতিবেশী দেশটিতে হামলার নির্দেশ দেন। এর অল্প সময়ের মধ্যেই ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলার আঘাত হানতে শুরু করে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সামরিক সদরদপ্তর ও দেশটির সামরিক বাহিনীর মিসাইল কমান্ড সেন্টারগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।

তীব্র হামলার মুখে রাজধানী কিয়েভে জরুরি সাইরেন বাজায় কর্তৃপক্ষ। এতে কিয়েভের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বহু মানুষ শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করেন। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া হামলা থেকে বাঁচতে মানুষ বাড়ির বেজমেন্ট ও অন্যান্য নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়ে থাকছেন।