কেবল মোদিই পারেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে!

হামলার দাবি নাকচ, পাল্টা দাবি -এগুলোর মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সত্যি সত্যি শুরু হয়ে গেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। মস্কোর ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে কিয়েভে। পালটা জবাব দিচ্ছে ইউক্রেনও। রুশ বিমান ও হেলিকপ্টার গুলি করে নামানো হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি। ইউক্রেনের বিমানঘাঁটিসহ বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ সেনারা। সব মিলিয়ে একদিনেই অনেক কিছু ঘটে গেছে আধুনিককালের এ যুদ্ধে।

মোদি ও পুতিন

বিশ্বনেতারা রাশিয়াকে হুমকি দিচ্ছেন। এরইমধ্যে বেশকিছু অবরোধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, এমন হুমকি দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে কেবল মোদিই পারেন এ যুদ্ধ থামাতে। ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে তারা এ প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার রুশ হামলা শুরু হলে ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ড. ইগর পোলিখা বলেন, আমি জানি না কতজন রাষ্ট্রনেতার কথা পুতিন শুনবেন। কিন্তু আমার মনে হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বিষয়ে আওয়াজ তুললে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারেন পুতিন।

ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া

তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই আলোচনা চালাতে পারে ভারত। অতীতেও শান্তিরক্ষার কাজ করেছে ভারত। এই মুহূর্তে আমরা ভারতের সাহায্য চাইছি। আমরা চাইছি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে বিশ্বের প্রতি দায়িত্ব পালন করুক ভারত।

এদিকে এ ধরনের আহ্বানের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফোন করে ইউক্রেনে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি কূটনৈতিক আলোচনা ও সংলাপের পথে ফিরে আসার জন্য সবপক্ষ থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।

মোদি বলেন, রাশিয়া ও ন্যাটো গ্রুপের মধ্যে যেসব পার্থক্য রয়েছে, তা কেবল সৎ ও আন্তরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। এ সময় পুতিন ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অবহিত করেন। তবে মোদির এ আহ্বানে পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করার ব্যাপারে কতটুকু আশ্বাস দিয়েছেন, তা জানা যায়নি।

রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে নয়াদিল্লি উভয় সংকটে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও মজবুত। সোভিয়েত আমল থেকেই ভারত রাশিয়া থেকে প্রচুর সমরাস্ত্র কিনে থাকে। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না মোদি সরকার। তাই আমেরিকা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অনেক হুমকি-ধমকি দিলেও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করেনি ভারত। অন্যদিকে, বাণিজ্যসহ একাধিক বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। ফলে এই মুহূর্তে নীতি নির্ধারণ করতে দোটানায় রয়েছে মোদি সরকার।

ফলে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো যেখানে কোনো না কোনো একটি পক্ষ বেছে নিয়েছে, সেখানে ভারত সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলছে। তারা এ মুহূর্তে কেবল ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েই চিন্তিত।