শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখরিত আফগান বিশ্ববিদ্যালয়

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ছয় মাসের মাথায় দেশের শীতপ্রধান এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবারো খুলে দেয়া হয়েছে। কিছুটা বিলম্ব হলেও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা এবং তাতে নিজেদের পছন্দনীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সবমিলিয়ে আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো আবারো শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়

এর আগে ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় জানিয়েছিল, শীতপ্রধান এলাকার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২৬ ফেব্রুয়ারি খুলে দেয়া হবে। সেই হিসেবেই গতকাল শনিবার নানগারহার, কান্দাহার, নিমরোজ, ফারাহ, হেলমান্দ প্রভৃতি প্রদেশে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট খুলে দেয়া হয়।

তবে এতে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। কোথাও ভিন্ন ক্লাস আবার কোথাও ভিন্ন শিফটের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়। আবার সংগীতের মতো কিছু কিছু বিষয় বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া সিলেবাসে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

ফৈজাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসে অংশ নেয়া ছাত্রীরা

আফগান উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমদ তকী বলেন, শনিবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউটগুলি আবার চালু করা হয়েছে। তালেবান প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, বাকি সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী মাসের শেষ নাগাদ খুলে দেয়া হতে পারে।

এদিকে কিছুদিন দেরি হলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত। বালখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বাদশা জার আবাদি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু হওয়া একটি দুর্দান্ত খবর। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার মুজিব রহমান আহমদজাই বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা হয়েছে এবং মেয়ে ও ছেলে শিক্ষার্থীরা দুটি ভিন্ন সময়ের শিফটে তাদের পাঠ চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজিয়া কামাল নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ইসলামি আমিরাত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় খুলে দিয়েছে। এতে আমি খুব খুশি। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী বহিজা আমান বলেন, আমাদের সিলেবাসে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। আমার ক্লাসে আগের শিক্ষকরাই আছেন। আমি খুশি যে, তালেবান অবশেষে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে দিয়েছে। নতুন আরোপিত বিধিনিষেধের ব্যাপারে তিনি বলেন, এগুলো সামান্য কিছু। আমি আইনের শাসনের প্রতি অনুগত, আমি তা অনুসরণ করব। তবে আমি আশা করি, এর বেশি পরিবর্তন হবে না। বহিজা আফগানিস্তানে স্নাতক পাস করে শেষ পর্যন্ত ডক্টরেট অর্জনের আশা করছেন।

তবে কাবুল ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী বলছেন, পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের শ্রেণি-বিচ্ছিন্নতা পাঠদানের পদ্ধতিকে প্রভাবিত করেছে। আবার দুটি ভিন্ন সময়ে ক্লাস করার বিষয়টি পর্যাপ্ত প্রশিক্ষকের অভাবকে আরো প্রকট করে তুলেছে।