মোদিকে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা: লাশের অপেক্ষা করছেন!

তুলনামূলক কম খরচে ডাক্তারি পড়তে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় শিক্ষার্থী পাড়ি জমায় ইউক্রেনে। তথ্য অনুযায়ী ইউক্রেনে পড়তে যাওয়া প্রায় ৮০ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীদের এক-চতুর্থাংশই ভারতীয়। ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালালে বিপাকে পড়ে গেছেন ভারতীয় এসব শিক্ষার্থী।

ভারতীয় তিন শিক্ষার্থী

তাদের অভিযোগ, মোদি সরকার অনেক বাগাড়ম্বর করলেও বাস্তবে এখন পর্যন্ত খুব কম সংখ্যক ভারতীয় শিক্ষার্থীদের দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। যা মোট সংখ্যার কয়েক শতাংশ হতে পারে। বাকিরা সেখানে অসহায়ভাবে সময় কাটাচ্ছে। আগে যেমনই ছিল, ভারতীয় শিক্ষার্থী নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানাগোদারের মৃত্যুর পর ক্ষোভ-উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে ভারতীয়দের মধ্যে।

পূজা প্রহরাজ নামের এক ছাত্রী টুইট করে জানান, ভিক্ষুকের মতো বারবার আবেদন করার পরও দেশে ফেরার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কি আমাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান? ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে পূজা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি এ কথাগুলো বলেন।

সীমান্ত পাড়ি দিতে উদগ্রীব ভারতের শিক্ষার্থীরা

টুইটে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। একপর্যায়ে সরকারের প্রতি নিরাশ হয়ে তিনি অভিনেতা সোনু সুদের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানতে চেয়েছেন, করোনাতে যেভাবে তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িছিলেন, এখন কোনোভাবে তাঁদের সাহায্য করতে পারবেন কি না।

পূজা আরো বলেন, গত ছ’দিন ধরে আমরা ভারত সরকারের কাছে ভিক্ষা চাইছি। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আজ একজনের প্রাণ গিয়েছে। কাল ১০০ জন মারা যাবে, তারপর হাজারজন। আপনারা কি আমাদের ৪ হাজার জনের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে নিজের টুইটে মেনশনও করেছেন পূজা।

জানা গেছে, ভারত সরকার পড়ুয়াদের ফেরাতে ‘অপারেশন গঙ্গা’ নামের অভিযান শুরু করলেও এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মাত্র ২০০ হাজার জন শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরাও।

ভারতের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা সরকারকে প্রশ্ন করে বলেন, সরকার আগেই জানত এই পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাহলে এত ঢিলেমি কেন? ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ থাকলেও ভারতীয় দূতাবাসের উচিত ছিল আগেভাগে সব ভারতবাসীকে সীমান্তে পাঠানোর। ভারত সরকারের মানসিকতার জন্য, ইউক্রেনের সেনাদের হাতে হেনস্তা হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।