তবে কি ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে?

এক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। অনেক বিশ্লেষকের আশঙ্কা, এই যুদ্ধই শেষ পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ হতে পারে। ইতোমধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সংকট দুই দেশের, কিন্তু বেকাদায় পড়েছে পুরো বিশ্বের মানুষ। দিন দিন যুদ্ধের পরিস্থিতির যেমন অবনতি হচ্ছে, তেমনি রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর দূরত্ব ও উত্তেজনা আরো বাড়ছে।

তবে কি ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে?

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো এখন ইউক্রেনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে কোমড় বেঁধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেটা তাদের তোড়জোর দেখেই আঁচ করা যায়। পরিস্থিতি যখন এই তখন আরেকবার পরমাণু অস্ত্র ও তৃতীয় বিশ্ব এবং সেটার পরিণতি সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

আজ বুধবার তিনি ঘোষণা দেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি শুরু হয়ে যায়, তাহলে সেই যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া। আর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হলে সেটা হবে এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ। যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা আরআইএ’র বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।

ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর আতঙ্কের মধ্যেই নিজের দেশের পারমাণবিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যা নিয়ে ইতোমধ্যে চরম চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্ব পুতিনের এ কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে। অথচ এর মধ্যেই এবার চরম বার্তা দিলেন পুতিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ল্যাভরভ বলেন, গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিয়েভ যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে তাহলে, সত্যিকার বিপদের মুখোমুখি হতে হবে সবাইকে। তার মতে, কোনো কারণে যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগেই যায়, তাহলে তাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হবেই।

এদিকে, রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে আজ বুধবার ইউক্রেনে প্রথম বড় রকমের সাফল্য পেয়েছে রুশ সামরিক বাহিনী। এদিন দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ খেরসন বন্দরনগরী পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।

এরপরই মূলত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ, ব্রিটেন ও আমেরিকার মতো দেশগুলো ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করার বার্তা দিয়েছে। এমনকি ইইউ যুদ্ধবিমান পর্যন্ত দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে দূরত্ব আরো বাড়ছে। কিন্তু তারপরও ইউক্রেনের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান অব্যাহত রেখেছে রুশ বাহিনী।

সবকিছু মিলিয়ে ক্রমেই আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে ইউরোপ। এ অবস্থায় প্রবল হচ্ছে রাশিয়া বনাম পশ্চিমা বিশ্বের যুদ্ধের সম্ভাবনা। আর সেটা হলে কোভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্ব তার ক্ষত সারিয়ে উঠার আগেই হয়তো আরেক মহাদুর্যোগে পতিত হতে পারে।