আপনি পড়ছেন

রাশিয়া থেকে ইউরোপে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছে মহাদেশীয় জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ব্রাসেলসে এ বৈঠক করছেন। তবে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করলে ইউরোপে গ্যাস সররবাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।

russian oil and european unionরাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা: দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ

জানা গেছে, লিথুয়ানিয়াসহ বাল্টিক অঞ্চলের কয়েকটি দেশ রাশিয়ার জ্বালানি খাতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে তাড়া দিচ্ছে। অন্যদিকে জার্মানি ও অন্য কয়েকটি দেশ এ বিষয়ে এখনই তড়িঘড়ি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার পক্ষে।

রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে ইউরোপের দেশগুলো নতুন করে আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইছে বলে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি- বিষয়ক প্রধান হোসেপ বোরেল বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, মারিউপলে বড় ধরনের যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। রাশিয়া অনেক যুদ্ধাপরাধ করছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করতে হবে।

flag european union 1দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত দেশটির বিরুদ্ধে চার দফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। রাশিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর বিধিনিষেধের পাশাপাশি এসব নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছে রাশিয়া ও বেলারুশের উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়ী, প্রশাসকসহ দুই দেশের মোট ৬৮৫ জন নাগরিককে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইইউর পঞ্চম দফা নিষেধাজ্ঞায় আরও কিছু রুশ নাগরিকের নাম কালো তালিকাভুক্ত হবে। তবে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের বিষয় হয়ে উঠেছে রাশিয়ার তেল ও জ্বালানি খাতের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নটি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও ইইউর ২৭টি দেশের জন্য একই পথে এগোনো খুব কঠিন।

গেরস্থালি ও শিল্পোৎপাদনসহ নানা প্রয়োজনে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল ইউরোপীয় দেশগুলো। ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত রাশিয়াকে গ্যাসের মূল্য বাবদ ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে ইউরোপের দেশগুলো। ইউরোপের মোট গ্যাস চাহিদার ৪০ শতাংশ মেটানো হয় রাশিয়া থেকে আমদানির মাধ্যমে। রাশিয়ার তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে এসব দেশের গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মস্কোর কর্মকর্তারা।

ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকে লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলিউস লান্ডবেরজিস বলেন, তেল আমদানি বন্ধের কথা আলোচনা না করে উপায় নেই। কারণ তেল খাত থেকেই রাশিয়ার বাজেটের সিংহভাগ এসে থাকে।

লিখুয়ানিয়ার মন্ত্রীর সঙ্গে সহমত পোষণ করে আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভিনি বলেছেন, এ মুহূর্তে ইউক্রেনে যে মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ চলছে তাতে জ্বালানি খাত, বিশেষতঃ তেল ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার পক্ষে জোরালো যুক্তি থাকতে পারে না।

অবশ্য জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার তেল আমদানিতে এ মুহূর্তেই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাসেলসের বৈঠকে জার্মান প্রতিনিধি বলেছেন, জ্বালানির বিকল্প উৎস নিশ্চিতের আগে তাড়াহুড়ো করে এমন নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপকে বিপদে পড়তে হবে।

একদিকে আয়ারল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও বাল্টিক দেশগুলো, অন্যদিকে জার্মানি ও সমমনা কয়েকটি দেশ- এ দুইপক্ষের পরষ্পরবিরোধী অবস্থানে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলে নির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে জোটের চলতি ষাম্মাসিক মেয়াদের সভাপতি ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ রাশিয়ার তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রতি পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে, মানুষজন বাস্তুচ্যুত হতে থাকলে নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে কিছু ‘নিষিদ্ধ’ বা ‘ট্যাবু’ থাকা উচিত হবে না।

এদিকে রাশিয়ার তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপকে খুব কষ্টে পড়তে হবে বলে সতর্ক করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি (রাশিয়ার) তেল সরবরাহের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এ মূহূর্তে জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে। এটা খুব জটিল বিষয়। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে। রাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপের জ্বালানি ভারসাম্যের বিরাট অবনতি ঘটবে। একই সময়ে আমেরিকানরা ইউরোপীয়দের চেয়ে অনেক ভালো থাকবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.