ইউক্রেনে অবকাঠামোগত ক্ষতি ছাড়াল ৬ হাজার কোটি ডলার

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনের অবকাঠামোগত ক্ষতি ৬ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর আনাদোলু।

রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি সেতু

কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের দেয়া একটি রিপোর্ট অনুসারে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। এসব শহর থেকে মানুষ পালিয়ে গেছে। রয়ে গেছে অবকাঠামোর ভৌতিক উপস্থিতি। এই এক মাসে অবকাঠামোগত ক্ষতি ৬২ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন বা ৬২৮৮ কোটি ডলার পার হয়ে গেছে, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৩৫০০ কোটি ডলার।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রুশ হামলায় এরই মধ্যে ৮ হাজারের বেশি রাস্তা, ২৬০টি সেতু, চার হাজার ৪৩১টি বাসস্থান, ৯২টি কারখানা, ৩৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৩৮টি স্বাস্থ্য সুবিধা, ২টি বন্দর, ৮টি বেসামরিক ও ১০টি সামরিক বিমানবন্দর এবং একটি পারমাণবিক কেন্দ্রসহ ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কিয়েভের একটি বিশ্ববিদ্যালয় জ্বলছে

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ সময়ে ইউক্রেনে কমপক্ষে ১ হাজার ৮১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ১ হাজার ৭০৭ জন আহত হয়েছেন। তবে মূল সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংঘাতের সূচনা হয়। শুরুতে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে নানা বিধিনিষেধ দেখিয়ে সরাসরি সাহায্য করা থেকে বিরত থাকে ন্যাটো। এমনকি ইউক্রেনের আকাশসীমাকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার আহ্বানকেও খারিজ করে দেয় ন্যাটো সদস্যগুলো। তারা জানায়, এটি করা হলে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে হবে।

লড়াইয়ে না জড়িয়ে অবশ্য ন্যাটো সদস্যরা রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের অবরোধ আরোপের মাধ্যমে দেশটিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। এক মাসের মধ্যে দেশটির ওপর কয়েক হাজার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে রাশিয়া বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ইউক্রেনের ওপর আক্রমণের তীব্রতা কমেনি বরং তারা নতুন নতুন এলাকায় অভিযান বিস্তৃত করছে। এভাবে চলতে থাকলে আর ১ সপ্তাহের মধ্যেই অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, গত এক মাসে ৩৭ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। এছাড়া দেশের ভেতরে বাস্তুচ্যুত লোকজনের পরিমাণ ৬৫ লাখেরও বেশি। সব মিলিয়ে এক কোটির বেশি মানুষ তাদের আবাসস্থল থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।