শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন এরদোয়ান
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে দেশটির সামরিক বাহিনী প্রতিবেশী ইউক্রেনে তাদের ভাষায় বিশেষ অভিযান শুরু করে। প্রথমে মনে হয়েছিল, এক সপ্তাহের আগেই ইউক্রেনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে রাশিয়া। এতে দুই দেশের ক্ষয়ক্ষতি যেমন কমবে, তেমনি তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে পড়বে বিশ্ব।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ফাইল ছবি
কিন্তু সেটা হয়নি। বরং এক-দুই দিন করতে করতে মাস অতিক্রম করেছে যুদ্ধ। ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে রাশিয়ার ওপর শত শত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এবং তাদের মিত্ররা। ফ্রান্স পুরোপুরি এ পথে হাঁটেনি। আর অন্যদের অবস্থা তো ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’। যুদ্ধ বন্ধের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ একমাত্র তুরস্ক ছাড়া অন্যদের পক্ষ থেকে বলা যায় দেখাই যায়নি।
পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে তা বন্ধের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী মুসলিম দেশ তুরস্ক। দেশটির নেতা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এ ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো ভূমিকা রাখছেন। ইতোমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন তিনি। কথা হয়েছে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নেতার সঙ্গেও।
যুদ্ধ বন্ধে দৌড়-ঝাঁপ করছেন এরদোয়ান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগ্লু। আঙ্কারার এমন উদ্যোগের প্রথম প্রতিফলন ঘটে গত ১০ মার্চ। তুরস্কের মধ্যস্থতায় ওই দিন দেশটির আন্তালিয়া শহরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উপায় বের করতে আলোচনায় বসেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। যা ছিল যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের কূটনীতিকদের বৈঠক। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কাভুসোগ্লু নিজেও।
ওই দিন উল্লেখ্যযোগ্য কোনো অগ্রগতি ছাড়াই আলোচনা শেষ হলেও শান্তি প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহরে ইস্তাম্বুলে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী শান্তি আলোচনা। যাকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছে খোদ যুদ্ধরত দুই দেশ। এমনকি রাশিয়ার পক্ষ থেকে তুরস্ক ও দেশটির জনগণকে এই মধ্যস্থতার জন্য ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আলোচনার পাশাপাশি এরদোয়ান বার বার উভয়পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভেতরে ভেতরে চলছে কূটনৈতিক তৎপরতাও।
তুর্কি নেতার এসব উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতেই ডাচ সাংবাদিক সাসকিয়া ভ্যান ওয়েস্টথ্রিনেন বলছেন, এর জন্য শান্তিতে নোবেল পেতে পারেন এরদোয়ান।
তিনি তার পত্রিকা আলজেমিন ডাগব্লাডে লিখেছেন, ‘হঠাৎ, কোথাও থেকে, ইউক্রেনের জন্য আশার ঝলক দেখা যাচ্ছে। রটারডামে অবস্থিত ডাচ দৈনিকটির প্রধান ভ্যান লিখেছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ছাড়া আর কারও কথা শোনা যাচ্ছে না। তিনি যে ঐতিহাসিক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যখন বিশ্ব ইউক্রেনে পুতিনের আগ্রাসন থামানোর জন্য নিঃশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করছে।
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার আগে তাদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। সে বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে ভ্যান লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এর আগে কখনও এই যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তির লক্ষণ এতটা ইতিবাচক ছিল না।’
ওই দিন আলোচকদেরকে লক্ষ্য করে তুর্কি নেতা বলেছিলেন, আমরা বিশ্বাস করি, একটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো ক্ষতি হবে না এবং দীর্ঘস্থায়ী একটি সংঘাতে কেউ লাভবান হবে না।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, ডাচ সাংবাদিক তার লেখায় আরও বলেছেন যে, তুরস্ক ‘বিশ্ব মঞ্চে একটি বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে।’
ভ্যান বলছেন, ‘যদি সবকিছু কার্যকর হয়, তাহলে এরদোয়ান তার বর্তমান অবস্থানের কারণে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিততে পারেন। একজন মার্ক রুট বা জো বাইডেন এ থেকে অনেক দূরে। এবং সত্যিই এটি চিন্তা করার মতো কিছু।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়ান সেনাবাহিনী। রাশিয়ার এই হামলা আন্তর্জাতিক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশ মস্কোর ওপর কঠোর আর্থিক ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে৷
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইউক্রেনে কমপক্ষে ১ হাজার ১৮৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার। যদিও প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত অনেক বেশি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্য বলছে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে দেশটির ৪০ লাখের বেশি মানুষ প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। এ ছাড়া আরও লাখ লাখ মানুষ দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.