আরও এক মাস অন্ধকারে থাকবে শ্রীলঙ্কা!

এক সীমাহীন সংকট ঘিরে ধরেছে শ্রীলঙ্কাকে। দিনে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না দেশটিতে। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানি আমদানির অর্থ প্রদান করতে অক্ষম দেশটির সরকার। সৃষ্ট সংকটে বিদ্যুতের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মনোযোগ দিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী পবিত্র ওয়ানিয়ারাচ্চি। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কমপক্ষে আরও এক মাস সময় লাগবে দেশটির। রয়টার্স।

শ্রীলঙ্কার চলমান বিদ্যুৎ সংকট আরও এক মাস থাকবে

মন্ত্রী জানান, অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘণীভূত হওয়ায় সড়কের বাতিগুলো দ্রুত বন্ধ করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী ভারত থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইনের অধীনে একটি চালান শনিবার শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ওয়ানিয়ারাচ্চি জানান, তা সত্ত্বেও শিগগিরই বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, চালানটি পৌঁছানোর পর যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তবে লোডশেডিং কমানো আপাতত সম্ভব হবে না। তবে এ সংকট মে মাসের কিছু সময় পর্যন্ত থাকতে পারে। শ্রীলঙ্কার ৪০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে আসে। মন্ত্রী জানান, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোকে সচল রাখতে জলাধারগুলোতে জলের স্তর রেকর্ড পরিমাণে নেমে গিয়েছিল। অথচ শুষ্ক এ মৌসুমে তাপমাত্রাও রেকর্ড স্তরে পৌঁছে গেছে। তাই আমরাও নিরুপায়।

দেশটির রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে ১০ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে সেটি আরও তিন ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, সরকারিভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ লক্ষ্যে ১৩ লাখের বেশি সরকারি কর্মচারীকে অফিসে না এসে বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতিদানের সরকারি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

পাবলিক ইউটিলিটির চেয়ারম্যান জনকা রত্নায়েকে বলেন, আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি- সরকারি সেক্টরের কর্মচারীদের আগামী দুই দিনের জন্য বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক।

শ্রীলঙ্কার প্রধান খুচরা জ্বালানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশে কমপক্ষে দুই দিনের জন্য গণপরিবহনে কোনো ডিজেল সরবরাহ করা হবে না। তাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিক্ষোভে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।

গত দুই বছরে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমেছে এবং ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এটি ২ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যার ফলে খাদ্য ও জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি।