যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনকেই যুদ্ধের জন্য দায়ী করছে চীন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে চীনের প্রচারণাই স্পষ্ট করে দেয় যে, এই যুদ্ধ বিষয়ে শি জিন পিং-এর সরকারের অবস্থান কোথায়। এই ধারণা আরও স্পষ্ট হয়েছে যখন চীনের প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে দেশটির প্রাদেশিক শিক্ষা ব্যুরোর কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনকেই যুদ্ধের জন্য দায়ী করছে চীন

চীনের প্রতিটি প্রদেশে শিক্ষকদের ইউক্রেনের পরিস্থিতি সঠিকভাবে বোঝার জন্য যে বাধ্যতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই সভা থেকেই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। জানা গেছে, ওই সভায় শিক্ষকদের এটাই বুঝিয়ে বুলা হয়েছে যে এই যুদ্ধে রাশিয়ার দোষ নেই এবং সব দোষ যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো এবং ইউক্রেনের।
চীনা টুইটার অ্যাকাউন্টগুলো আরও জানিয়েছে, এই সভাগুলো কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যই বাধ্যতামূলক নয়, উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যও বাধ্যতামূলক।

চীন প্রকৃতপক্ষে রাশিয়ার প্রচারের ধরণকেই গ্রহণ করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্ম্যগুলো কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাশিয়ার প্রচার করা সংবাদ প্রকাশ করছে, চীনা সংবাদমাধ্যমগুলো ইন্টারনেটে তাদের বিভ্রান্তি বাড়াতে সাহায্য করেছে।

যদিও জনসাধারণের মাঝে এবং আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনগুলোতে প্রদানকৃত বিবৃতিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের বিষয়ে চীনের কর্মকর্তারা একটি ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’ গ্রহণ করেছে। তবে সাম্প্রতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে বেইজিংয়ের আসল উদ্দেশ্য এখন বিশ্বের কাছে উন্মোচিত। সেইসঙ্গে চীন ইউক্রেনে রুশ কর্মকাণ্ডের নিন্দাও করেনি বা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বেইজিং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করার কথাও বলেনি।

সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুসারে, চীনের ১.৪ বিলিয়ন জনগণকে এটাই বোঝানো হচ্ছে যে, ইউক্রেনে রাশিয়া শুধুমাত্র একটি বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। অন্য আরেকটি প্রচারণায় চীন বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে একটি জৈবিক অস্ত্র কর্মসূচিতেও অর্থায়ন করছে।

এক বিশ্লেষণে জানা গেছে, রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রথম ৮ দিনের মধ্যে ১৪টি চীনা গণমাধ্যম থেকে প্রায় ৫ হাজার পোস্ট দেশটির সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েইবোতে পোস্ট করা হয়েছিল।

বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কে করা ৩০০ এর বেশি পোস্টের মধ্যে প্রায় ১৪০টি পোস্টই রাশিয়া পন্থী ছিল। এর কোন কোন পোস্ট আবার এক হাজারেরও বেশি শেয়ার করা হয়েছিল। এই পোস্ট গুলোর তথ্য কোন ক্ষেত্রে কোন রাশিয়ান কর্মকর্তা বা সরাসরি কোন রাশিয়ান গণমাধ্যম থেকে নেওয়া।