রিয়াজ বাহিনীর যত অপরাধ!

গত ২৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে সশ্রস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তার আগে গত ১৫ মার্চ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শফিক ও শামীম মল্লিক নামে দুই ব্যক্তিকে তাদের বাসার সামনে অতর্কিতভাবে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়।

রিয়াজ বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার

এ ছাড়াও গত ২৩ ডিসেম্বর রূপগঞ্জ এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিদ্যুৎ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে এসে বিদ্যুৎকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। সেই গুলি পাশের বাড়ির একটি নিষ্পাপ মেয়ের চোখে লেগে তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এরও আগে গত ৭ নভেম্বর একই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়।

এই সবগুলো ঘটনা পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও র‍্যাবের গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে, ঘটনাগুলো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, অবৈধ জমি দখলকে কেন্দ্র করে "রিয়াজ বাহিনীর" প্রধান শুটার রিয়াজের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পেশাদার খুনি ও অবৈধ অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শুটার রিয়াজ (২২)  এবং তার সহযোগী মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে কালা ভাগিনা (২৩), মারুফ হোসেন মুন্না (২৩), মো. সেলিম (২৩) এবং মো. মাহবুব মিয়াকে (২৩) গ্রেপ্তার করে।

অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৩টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি ম্যাগাজিন, ১২ রাউন্ড গুলি, ৫টি ধারালো দেশিয় অস্ত্র, একটি মোটরসাইকেল এবং ৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট।

এ বিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তার আসামিরা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও ও তার আশপাশের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে আসছিল।

তাদের সন্ত্রাসী দলের সদস্য সংখ্যা ১০-১৫ জন। রিয়াজের নেতৃত্বে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য তার বাহিনী অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিত। এ ছাড়াও রিয়াজের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী দলের সদস্যরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ওই সব এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, মার্কেট ও বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করতো।

তারপরও কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে ত্রাস সৃষ্টির জন্য হামলা, আক্রমণ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো চক্রটি। এলাকায় ভয়ে রিয়াজ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না। রিয়াজের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী দল এলাকার বালু ভরাট ও মাটি কাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো। ট্রাক প্রতি নির্ধারিত হারে তার দল চাঁদা নিত। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।