প্রোটিয়াদের যে কৌশলে ঘায়েল বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকা মানেই ফাস্ট বোলারদের স্বর্গ রাজ্য। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে দুরন্ত গতির পেস, বাউন্সে নাকাল করাই প্রোটিয়াদের চিরাচরিত কর্ম। এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টে নিজেদের শক্তির বাইরে গিয়ে পরিকল্পনা করে সফল হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডারবান, পোর্ট এলিজাবেথে বাংলাদেশকে পেস নয় স্পিনের ফাঁদে ফেলে ঘায়েল করেছে স্বাগতিকরা। হোম কন্ডিশনে স্পিনকে প্রাধান্য দিয়ে খেলার বিষয়টি তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে শুধু ব্যতিক্রম নয়, বিরলও বটে।

প্রোটিয়াদের যে কৌশলে ঘায়েল বাংলাদেশ

দুই টেস্টেই কেশভ মহারাজ ও সিমন হার্মারকে দিয়ে টাইগারদের ধসিয়ে দিয়েছে প্রোটিয়ারা। স্পিন খেলতে সিদ্ধহস্ত মুশফিক-মুমিনুলরা মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারেননি। কারণ স্বাগতিকদের স্পিনিং পরিকল্পনার বিষয়টি চিন্তা করেনি বাংলাদেশ, যা পুরোই অবাক করেছে মুমিনুল বাহিনীকে।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কাছে ২-১ এ সিরিজ হেরে রীতিমতো নাক-কাটা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। টেস্টে তাই অনুমিত চিন্তা-ভাবনার বাইরে গিয়ে টাইগারদের জন্য কৌশল সাজিয়েছিল মার্ক বাউচারের শিষ্যরা। তাতে নিজেদের শক্তির বাইরে যেতে হয়েছে বটে, কিন্তু সাফল্য এসেছে পুরোপুরি।

টেস্ট সিরিজের জন্য মুমিনুলরা বগুড়ায় বাউন্সি উইকেটে অনুশীলন করেছেন। পরে কেপটাউনেও দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করেছেন বাংলাদেশের টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা। সেই খবর অজানা ছিল না প্রোটিয়াদের। তাছাড়া রাবাদা-লুঙ্গিরা না থাকায় পেস আক্রমণের ধার কমেছিল তাদের। তাই তো পেস বাদ দিয়ে স্পিনেই ভরসা রেখেছিল দলটি।

সোমবার ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ডিন এলগার ও সিরিজ সেরা বাঁহাতি স্পিনার মহারাজও জানিয়েছেন, অনভ্যস্ত কৌশল-পরিকল্পনায় খেলার বিষয়টি।

এলগার বলেছেন, ‘খুব খুশি যেভাবে ছেলেরা শেষ দুটি টেস্ট খেলেছে। প্রচন্ড কঠিন প্রক্রিয়ার খেলা বাস্তবায়ন করতে হয়েছে এবং যেটাতে আমি অভ্যস্ত নই। তারপরও এটা দারুণ চেষ্টা ছিল।’

তবে দলটাকে দুর্বল মানতে নারাজ এলগার। দুই টেস্টের তিন ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেছেন, ‘মানুষ বলছিল দুর্বল দল। কিন্তু এভাবে দেখিনি। আমি দেখেছি এভাবে তাদেরকে এই পর্যায়ে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে তাদের স্কিল পরখ করার সুযোগ।’

দুই টেস্টে ১৬ উইকেট ও ১০৮ রান করে সিরিজ সেরা মহারাজ। পোর্ট এলিজাবেথেও ম্যাচ সেরা তিনি। বাঁহাতি এ স্পিনার বলেছেন, ‘সত্যিই খুশি যে দলটা জিতেছে। কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল এবং যেটাতে আমরা অভ্যস্ত নই। কিন্তু কৃতিত্ব দলের যে দারুণভাবে সাড়া দিয়েছে।’

ডারবানে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানেও উইকেটশূন্য ছিলেন মহারাজ। তারপর কোচ, অধিনায়কের আস্থাবাণী শুনে উজ্জীবিত হয়েছেন তিনি।

মহারাজ বলেন, ‘ডারবানে প্রথম ইনিংসে যখন উইকেট পাইনি তখন কোচ ও ডিন (এলগার) আমার সাথে কথা বলেছে। বলেছে, তুমি ঠিক কাজই করছো। তোমার সময় আসবে। হয়তো দ্বিতীয় ইনিংসে এমন অবস্থান আসবে যেখানে তুমি যাবে এবং উইকেট নিবে। তারপর থেকে আমি পিছনে ফিরে তাকাইনি।’