আপনি পড়ছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা ঢাবির এক দল নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র অর্থাৎ টিএসসিতে মেয়েদের নামাজের ব্যবস্থা করতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন গত মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল। ভিসির সম্মতি দেওয়া এ সংক্রান্ত একটি চিঠি টিএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

du tsc women students salahনিজেরাই পর্দা টানিয়ে টিএসসিতে নামাজ পড়লেন ছাত্রীরা

এ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী নিজেরাই পর্দা টেনে জোহরের নামাজ আদায় করেন। টিএসসিতে থাকা ছেলেদের নামাজের স্থানের পাশে পর্দা টেনে নামাজ পড়েন ওই ছাত্রীরা। এ নিয়ে সামান্য উত্তেজনা দেখা দেয় বলে জানা গেছে।

তবে পরবর্তীতে নামাজের স্থান তৈরি করে দিতে আরো ১০ দিনের সময় চাওয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এতে আপত্তি জানান ওই নারী শিক্ষার্থীরা। তাদের বক্তব্য হলো, টিএসসিতে জায়গা আছে, সেখানে কিছুটা সংস্কার করলেই নামাজের জায়গা তৈরি করা সম্ভব।

du tsc women students salah innerনিজেরাই পর্দা টানিয়ে টিএসসিতে নামাজ পড়লেন ছাত্রীরা

ওই ছাত্রীরা আরো বলছেন, টিএসসিতে ছেলেদের নামাজের ব্যবস্থা আছে, অথচ মেয়েদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। টিএসসিকে কেন্দ্র করে এখানে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এসব কর্মসূচি উপলক্ষে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও টিএসসিতে অবস্থান করতে হয়।

তাছাড়া রমজান মাস আসলে বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা এবং জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতিগুলোর পক্ষ থেকে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। যেহেতু ইফতারের পর এখানে মেয়েদের নামাজের ব্যবস্থা নেই, সে কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত হন অনেক ছাত্রী, বলেন তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা ইসলাম উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা গত সপ্তাহে ভিসি স্যার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলাম, যাতে টিএসসিতে মেয়েদের নামাজের স্থান নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ করা হয়। এ ব্যাপারে ভিসি স্যারের মৌখিক সম্মতিও পাওয়া গেছে।

কিন্তু প্রশাসনের দিক থেকে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই কোনো উপায় না দেখে আজ আমরা ছেলেদের নামাজের স্থানের পশ্চিম পাশে থাকা ফাঁকা জায়গায় পর্দা দিয়ে ঘিরে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করেছি। সেখানে আমরা জোহরের নামাজ আদায় করেছি। আমরা আশা করছি, প্রশাসন তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ১০ দিনের মধ্যে নামাজের স্থায়ী স্থান সমাধান করবে, বলেন নাফিসা।

এ বিষয়ে টিএসসির উপদেষ্টা ড. শিকদার মনোয়ার মুর্শেদ বলেন, আসলে ওই ছাত্রীরা নিয়মের বাইরে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে ফেলেছে। অফিসিয়াল প্রক্রিয়ার জন্য আমরা তাদের কাছে ১০ দিনের সময় চেয়েছি। কিন্তু আমাদের কোনো কথাই তারা শুনছে না।

উল্লেখ্য, ঢাবির বেশ কিছু নারী শিক্ষার্থী এর আগে গত মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন। তাতে টিএসসিতে নামাজের স্থান বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। ওই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যেখানে ছেলেদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে, তার পাশে উপযুক্ত একটি খালি জায়গায় সামান্য সংস্কার করলেই নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা সম্ভব।