১৯৮১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কিনতে মার্কিন ভোক্তারা যে মূল্য পরিশোধ করেন, মার্চ মাসে তা এক বছর আগের তুলনায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। বছরওয়ারি হিসাবে এটা ১৯৮১ সালের পর দ্রুততম মূল্যস্ফীতি। মঙ্গলবার মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
১৯৮১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ভোক্তা মূল্যস্ফীতি
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ডলারের মূল্য সমন্বয় ছাড়া হিসাব করলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) এক বছর আগের তুলনায় মার্চ মাসে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে ডাও জোনস সূচক ৮ দশমিক ৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, এটা তার চেয়ে বেশি। তবে খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যগুলো বাদ দিলে সিপিআই বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ডাও জোনস পূর্বাভাসের সমান।
মার্কিন শ্রম দপ্তরের এবারের তথ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির যে চিত্র এসেছে, সেটা সত্তর দশকের শেষ ও আশি দশকের গোড়ার দিকের মন্দা-মূল্যস্ফীতির (স্ট্যাগফ্লেশন) সময়ের প্রতিফলন মনে হচ্ছে। বস্তুত: মার্চ মাসের হেডলাইন মূল্যস্ফীতি ১৯৮১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। আর বিগত মাসের কোর মূল্যস্ফীতির হার ১৯৮২ সালের আগস্টের পর থেকে সর্বোচ্চ।
মূল্যস্ফীতির উচ্চহারের কারণে মার্কিন নাগরিকদের আয় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। মার্চ মাসে মার্কিন কর্মীদের প্রকৃত আয় এক বছর আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু এ আয়বৃদ্ধি জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় জনজীবনে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়তে পারে।
মার্কিন ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের পৃথক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মৌসুম-ভিত্তিক সমন্বয়ের পর মার্চ মাসে প্রতি ঘন্টায় গড় প্রকৃত আয় পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মার্কিন সিপিআই সূচকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে আছে বাসস্থান-সংশ্লিষ্ট নানারকম খরচ যেমন বাড়ি ভাড়া, মর্টগেজ পেমেন্ট, প্রপার্টি ট্যাক্স ইত্যাদি, যাকে শেল্টার কস্ট বলা হয়। মার্চ মাসে মার্কিন নাগরিকদের শেল্টার কস্ট শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে এক বছর আগের তুলনায় শেল্টার কস্ট বেড়েছে ৫ শতাংশ। ১৯৯১ সালের মে মাসের পর এটাই আবাসনের পেছনে বছরওয়ারি সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি।
সচরাচর মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত উপ-খাতগুলোতেই দাম বেড়েছে বেশি। যেমন-খাদ্যপণ্যের মূল্য এক মাস আগের তুলনায় মার্চে ১ শতাংশ বেড়েছে। চাল, গরুর মাংস, লেবু, কমলা ইত্যাদি ক্ষারজাতীয় ফল, সবজি- প্রতিটির মূল্য মার্চ মাসে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ ও বিদ্যমান সরবরাহে চাপ পড়ায় জ্বালানির দাম বেড়েছে ১১ থেকে ৩২ শতাংশ।
অন্য সময়ে মূল্যস্ফীতিতে ভূমিকা রাখলেও মার্চ মাসে পুরানো গাড়ি ও ট্রাকের মূল্য পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। যদিও এক বছর আগের তুলনায় গাড়ি ও ট্রাকের মূল্য এখনও ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। খাদ্য ও জ্বালানির বাইরে অন্যান্য কমোডিটির মূল্য শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমলেও বস্ত্র ও অন্যান্য সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্যস্ফীতিতে ইতিবাচক রাখতে পারেনি। ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে ২ শতাংশ, যা এক বছর আগের চেয়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সুদের হার বৃদ্ধি করছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের বাকি সময় এবং ২০২৩ সাল পর্যন্ত সুদ হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এর আগে সবশেষ যখন এমন মূল্যস্ফীতি দেখা গিয়েছিল, ফেডারেল রিজার্ভ তখন বেঞ্চমার্ক সুদ হার প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছিল। এতে করে অর্থনীতির গতি শ্লথ হতে হতে মন্দাবস্থায় পৌঁছেছিল এবং অবশেষে মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়াও হার মেনেছিল।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.