বাংলাদেশের ম্যাচটাই মনে করিয়ে দিলো দিল্লি

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনো দল যখন ২২২ রান তুলে ফেলে তখন আসলে প্রতিপক্ষ দলের কিছু করার থাকে না। তবু হাল ছাড়ল না মোস্তাফিজুর রহমানের দিল্লি ক্যাপিটালস। আশা জাগানিয়া শুরুর পর শেষ দিকে অবিশ্বাস্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল। শেষ অবধি মহানাটকীয় কিছু হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচটা ১৫ রানে জিতে যায় রাজস্থান রয়্যালস।

আশা জাগানিয়া শুরুর পর শেষ দিকে অবিশ্বাস্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল

ম্যাচের গল্পটা অন্যরকম হতে পারতো। রূপকথার প্রত্যাবর্তন হতে পারতো দিল্লির। কিংবা হারের ব্যবধান আরো কমিয়ে আনতে পারতো দিল্লি। সেটা হয়নি ’নো বল’ বিতর্কে। ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৩৬ রান দরকার ছিল দিল্লির। ওবেদ ম্যাককয়ের শেষ ওভারের শুরুর তিন বলে টানা তিন ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রভম্যান পাওয়েল।

ম্যাকওয়ের তৃতীয় বলটা ছিল ফুল টস। এর উচ্চতা নিয়েই যতো বিপত্তি বেঁধেছে। ওই ডেলিভারিটায় পাওয়েল ছক্কা হাঁকালেও ’নো বলে’র দাবি ওঠে দিল্লি শিবির থেকে। কিন্তু আম্পায়ার তাদের দাবিতে সাড়া দেননি। জমে ওঠা ম্যাচটা মুহূর্তেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। ২২ গজ থেকে তা পৌঁছে গেছে মোস্তাফিজদের ডাগ আউট অবধি।

ঋষভ যেন সাকিব আল হাসান

উত্তেজনা তখন চরমে। ওই বলটা নো হলে ৪ বলে ১৯ রানের সমীকরণ হতো পেত দিল্লি। পাওয়েল যেভাবে ছক্কা হাঁকানো শুরু করেছিলেন তাতে হিসেব মেলানোটা অসম্ভব হতো না। কিন্তু ’নো’ বলের সিদ্ধান্ত দেননি অনফিল্ড আম্পায়াররা। ডিআরএসও নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি তারা। তাতেই ক্ষেপে আগুন দিল্লি শিবির।

দিল্লির ডাগ আউট থেকে ততক্ষণে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। একটা পর্যায়ে দুই ব্যাটার পাওয়েল ও দুলদীপ যাদবকে মাঠ ছেড়ে চলে আসার নির্দেশ দেন দিল্লি অধিনায়ক ঋষবসহ সাপোর্টিং স্টাফরা। দুই ব্যাটারও মাঠ থেকে প্রায় বেরিয়েও এসেছিলেন। প্রতিবাদ করতে করতে মাঠে ঢুকে পড়েন দলটির এক সাপোর্টিং স্টাফ।

পরে আম্পায়াররা পাওয়েলের সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলেন। ওই ঘটনার পর তিন বলে দুই রান করতে সক্ষম হয় দিল্লি। তাদের আফসোস, শেষ ওভারে ২০ রান তুলেও জিতে পারল না দলটি। আরো হতাশার হচ্ছে ১৯তম ওভারে কোনো রানই করতে পারেনি দিল্লি। অথচ এর আগে ও পরে রানের গতি ছিল আশা জাগানিয়া।

এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফির অলিখিত সেমিফাইনালকে। যেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান সাকিব আল হাসানরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই ম্যাচে সতীর্থ ব্যাটারদের মাঠ থেকে বেরিয়ে আসতেও বলেছিলেন সাকিব। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও মাঠে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন; কথা বলেছিলেন আম্পায়ারদের সঙ্গে।

গতকাল মুম্বাইতে দিল্লি-রাজস্থান ম্যাচটায় ঋষভ যেন সাকিব এবং সাপোর্টিং ওই স্টাফ যেন সুজনের ভূমিকাতেই হাজির হলেন! থ্রিলার দুটি ম্যাচের পরিণতি অবশ্য দুরকম হয়েছে। নাটুকে ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু এদিন জিততে পারল না দিল্লি। তবে দুটো ম্যাচের দুটি ঘটনা যেন কাকতালীয়ভাবে মিলে গেল। নিদাহস ট্রফির ম্যাচটা যেন ফিরে এলো আইপিএলে। দুটো ম্যাচেরই সাক্ষ্যি হয়ে থাকলেন মোস্তাফিজ।