আপনি পড়ছেন

জাতীয় সংসদে গত ২৮ মার্চ প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন-২০২২ উত্থাপিত হয়। এটির ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টিই সাংবাদিক-বান্ধব নয় বলে মতামত তুলে ধরে ৬ ধরনের ‘জটিলতা’ বিষয় চিহ্নিত করে সম্পাদক পরিষদ। এবার প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, নোয়াব।

noab logoনিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, নোয়াব

আজ রোববার সংগঠনটির সভাপতি এ কে আজাদ ও সহ-সভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খানের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন’ নামে নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। এটি প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা, শিল্প আইন ও শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আইনটি পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় ইতিহাস-ঐতিহ্যসমৃদ্ধ সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা এখনকার পরিস্থিতি হওয়ার কথা কেউ ভাবতে পারেনি। সংবাদকর্মীদের স্বাধীন চিন্তার ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চাপ তৈরি করছে। তারপরেও গণমাধ্যমকর্মী আইন করা হলে সংবাদপত্র শিল্প আরো রুগ্ন হয়ে পড়বে, যা সাংবাদিকদের জন্যও মর্যাদাহানিকর।

mass media logoগণমাধ্যম, ফাইল ছবি

করোনাকালে সংবাদপত্র শিল্প ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে বলা হয়, এই সময়ে কাগজের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটাল বাস্তবতায় পাঠকপ্রাপ্তি ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে এই শিল্পকে। এ ছাড়া বিদ্যমান ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে নতুন আইনটির প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানানো হয়।

এর আগে সম্পাদক পরিষদের চিহ্নিত ৬ ধরনের জটিলতা হলো- প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনের মাধ্যমে ১. স্বার্থ রক্ষার নামে গণমাধ্যম শিল্প এবং গণমাধ্যমকর্মীদের নেওয়া হচ্ছে আমলাতন্ত্রের অধিকতর নিয়ন্ত্রণে। ২. গণমাধ্যম আদালত ও আপিল আদালত গঠন আইনি জটিলতা সৃষ্টি এবং স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

৩. আইনটি বাস্তবায়িত হলে এডিটোরিয়াল ইনস্টিটিউশন একেবারে ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কায় পড়বে। ৪. মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিপক্ষ বানানো এবং পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। ৫. সরকারকে সংবাদপত্র বন্ধের অধিকার দেওয়া হয়েছে, যা আগে নিবর্তনমূলক বিশেষ ক্ষমতা আইনে ছিল এবং পরে বাতিল করা হয়। 

৬. ব্যক্তি মালিকানাধীন সংবাদপত্র শিল্পকে প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যম পরিচালনায় সরকারের হস্তক্ষেপের পথ উন্মোচিত করবে। আইনটি পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে, সংবাদপত্রের বিকাশকে সংকুচিত করবে। এমন আইন চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।