রুশ যুদ্ধবিমান আটকাতে চেয়েছিল ন্যাটো, গম চুরির অভিযোগ ইউক্রেনের

বেশ কয়েকবার রাশিয়ার যুদ্ধবিমান আটকাতে ওঁৎ পেতে ছিল ন্যাটো। সৌভাগ্যক্রমে রুশ বিমানগুলো জোটের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি বলেই প্রস্তুতি-পর্বেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়েছে ন্যাটো যোদ্ধাদের। জোটের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, ২৬ এপ্রিল থেকে রাশিয়ার বিমানগুলোকে আটকাতে বাল্টিক ও কৃষ্ণসাগরে অবস্থানরত নিজেদের বিমানগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। আল জাজিরা, এএফপি।

রুশ যুদ্ধবিমান আটকাতে চেয়েছিল ন্যাটো

ন্যাটোর এয়ার কমান্ডের বরাত দিয়ে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে সিএনএন। শনিবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান সেনারা গমসহ দেশটির কয়েক লাখ টন খাদ্যশস্য চুরি করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

ন্যাটোর এয়ার কমান্ড জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার থেকে ন্যাটোর রাডারে বাল্টিক ও কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে অজ্ঞাত কয়েকটি বিমানের চলাচল করার বিষয়টি ধরা পড়ে। সেগুলো রাশিয়ার বিমান আশঙ্কা করে সেগুলো তাড়া করতে কিংবা আটকাতে বেশ কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েছিল ন্যাটো জোটের যুদ্ধ বিমানগুলো। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশের আকাশসীমার কাছে এমন প্রস্তুতি নিয়েছিল তারা।

বিবৃতিতে ন্যাটো জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমানগুলো তাদের চলাচলের তথ্য পাঠায় না বলে তাদের অবস্থান ও উচ্চতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না। রাশিয়ার বিমান ফ্লাইট পরিকল্পনাও জানায় না।

এদিকে, বাল্টিক অঞ্চলে পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং স্পেনের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে অজ্ঞাত বিমানকে আটকানো হয়েছে। অন্যদিকে, কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর আকাশসীমার দিকে এগোতে থাকা বিমান রোমানিয়া ও যুক্তরাজ্যের বিমানের মাধ্যমে খুঁজে বের করা ও তাড়া করা হয়েছে। তবে এসব জায়গায় মার্কিন কোনো বিমান অংশ নেয়নি।

২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইউক্রেন অভিযানে ব্যাপক প্রতিরোধ সত্ত্বেও দেশটির বেশ কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। চলমান যুদ্ধের মধ্যেই রুশ বাহিনী ইউক্রেন থেকে কয়েক লাখ টন গম ও অন্যান্য খাদ্যশস্য চুরি করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। দেশটির উপ-কৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোটস্কি বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের দখলকৃত এলাকা থেকে ‘কয়েক লাখ টন’ শস্য চুরি করেছে।

ইউক্রেনের জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি এই দাবি করেন। এ সময় তিনি উদ্বেগ ও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, দখলকৃত অঞ্চলে সঞ্চিত দেড় মিলিয়ন টন খাদ্যশস্যও রাশিয়ান বাহিনী চুরি করতে পারে।

এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, খেরসনসহ অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গম লুট করে নিজ দেশে পাঠাচ্ছে রুশ সেনারা। শুক্রবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এই অপরাধমূলক তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানিয়েছে, এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য রুশ সরকারের কাছে নেই।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, মহামারির কারণে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চলমান সংকটকে আরও তীব্র করতেই রুশ সেনাদের লুটপাটের এই নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একদিকে রুশ সেনারা খেরসন অঞ্চলে গম লুটপাট করছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দরে খাদ্যশস্যবাহী জাহাজগুলো আটকে রেখেছে এবং বাণিজ্যিক জাহাজের গতিপথে মাইন পেতে রেখেছে।