পররাষ্ট্রনীতি ও সেনাবাহিনী নিয়ে যা বললেন ইমরান খান

পাকিস্তানের ইতিহাসে ইমরান খানই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর পর প্রায় এক মাস হতে চলছে। এ অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার, ৫ মে প্রথমবারের মতো একটি পডকাস্টে কথা বলেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান। এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। 

ইমরান খান

খানের সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ আজ শুক্রবার, ৬ মে প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। পাশাপাশি পুরো বিষয়টা শোনার সুবিধার্থে লিংক সংযুক্ত করেছে গণমাধ্যমটি। এ সময় নিজের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ছাড়াও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন সাড়ে তিন বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এই রাজনীতিক।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই চেয়ারম্যান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি আসলে একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন, সেটা ‘কেউ’ পছন্দ করুক বা না করুক। এস্টাব্লিশমেন্টের (সেনাবাহিনী) সঙ্গে তার সম্পর্ক নষ্টের কারণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আমার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি প্রথম দিন থেকেই পরিষ্কার ছিল।’

‘যদি কেউ এটি পছন্দ না করে থাকে, তাহলে সে সম্পর্কে আমি জানি না।’ প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রধান নির্বাহী হিসেবে এটি অনুসরণ করার তার বিশেষ অধিকার ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এস্টাব্লিশমেন্টের সঙ্গে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের সম্পর্ক প্রসঙ্গে অন্য একটি প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় ইমরান খান এই জল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেন যে, তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে পরবর্তী সেনাপ্রধান করতে চেয়েছিলেন।

‘আমি চেয়েছিলাম, তিনি কঠিন শীতের মৌসুমে ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) মহাপরিচালক হিসেবে তার কাজ চালিয়ে যাক, কারণ ওই সময় আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের অবসান হতে চলছিল।’

ইমরান খান বলেন, ‘আপনি কঠিন পরিস্থিতিতে একজন গোয়েন্দা প্রধানের স্থলাভিষিক্ত কাউকে করতে পারেন না।’ এর পরিবর্তে গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজকে পরবর্তী সেনাপ্রধান হতে যাচ্ছেন, যোগ করেন পিটিআই চেয়ারম্যান।

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তিনি যোগ্যতার নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে সেনাপ্রধান নিয়োগের কথা ভাবতেও পারেন না।

ইমরান আরো বলেন, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফের মতো তিনি কখনোই সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাননি। কারণ তার (ইমরান) একটি 'পরিষ্কার রেকর্ড' ছিল এবং তিনি কাউকে ভয় পান না।

সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘নিরপেক্ষতার’ নীতিরও সমালোচনা করেন। বলেন, ‘যদি তাদের সত্য ও মিথ্যার মধ্যকার যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে কেউ মিথ্যাকে সমর্থন করে।’

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান। তাকে অপসারণের দুই দিন পর দেশটির পার্লামেন্ট শাহবাজ শরিফকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে।