অস্ত্র কিনতে তাইওয়ানকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেতার উপযোগী মার্কিন অস্ত্র কিনতে তাইওয়ানকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসনের ইচ্ছা, প্রথাগত যুদ্ধের উপযোগী অস্ত্রের পরিবর্তে তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এমন অস্ত্র কিনুক যেগুলো দ্বীপটির সীমিত জনবলের সেনাবাহিনীকে সমুদ্রপথে আসা চীনা আক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করবে। নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
তাইওয়ান সিহক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা তাইওয়ানের সেনাবাহিনীর সক্ষমতা পুনঃপরীক্ষা করছেন। সম্ভাব্য চীনা দখল ঠেকানোর সামর্থ্য তাইওয়ানের আছে কিনা সে বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন সেনাবাহিনীকে অপ্রতিসম ও ইতস্তঃ বিক্ষিপ্ত যুদ্ধের দিকে মনোযোগী করতে চাইছেন। এজন্য তিনি বিপূল সংখ্যায় দ্রুত স্থানান্তরযোগ্য, প্রাণঘাতী অস্ত্র কিনতে উদ্যোগী হয়েছেন, যেগুলো টার্গেট করা ও ঠেকানো কঠিন। তবে তাইওয়ানের সেনা কর্মকর্তাদের একটি অংশ নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল প্রবর্তনে কিছুটা অনীহা দেখাচ্ছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, তাইওয়ান অতীতে যেসব অস্ত্র কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে তার মধ্যে কিছু অস্ত্র চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের উপযোগী নয়। যেমন, তাইওয়ান লকহিড মার্টিনের তৈরি এমএইচ-৬০ আর মডেলের সিহক হেলিকপ্টার কিনতে চেয়েছে। এ ধরনের হেলিকপ্টার চীনের সঙ্গে যুদ্ধে কার্যকর হবে না বলে মার্কিনীরা মনে করছেন।
ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে তাইওয়ানকে জানানো হয়েছে যে, সিহক হেলিকপ্টারের মতো অস্ত্র কেনার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রহণ করবে না। কিছু বিশেষ ধরনের অস্ত্রের জন্য তাইওয়ানের দেওয়া সরবরাহ আদেশ অনুমোদনের জন্য মার্কিন সংস্থাগুলোর কাছে তদবির না করতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
অবশ্য তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চিউ কুয়ো-চেং গত বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা আরও আগেই সিহক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছি। এগুলোর দাম অত্যন্ত বেশি। আমাদের দেশের সামর্থ্যরে বাইরে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বারাক ওবামার আমলেও তাইওয়ানকে নতুন ধরনের অস্ত্র কিনতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। বাইডেনের আমলে এ চাপের ব্যাপ্তি ও বেগ বেড়েছে।
ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের একটি শিক্ষা হলো, চীনের সম্ভাব্য আক্রমণ নিবৃত্ত করতে তাইওয়ানকে সজারুতে রূপান্তরে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া প্রোগ্রামের ডিরেক্টর বনি গ্লেজার বলেন, আমার ধারণা ইউক্রেন দখলের আগেও এমন চিন্তা ছিল। তবে এখন ধারণাটি জোরালো হয়েছে। পেন্টাগনে অনেকেই ভাবছেন তাইওয়ানকে সিরিয়াস করতে হবে এবং আমাদেরকেও সিরিয়াস হতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তাইওয়ান যে ধরনের নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে, তাতে কার্যকর প্রতিরক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবে না, এমন অস্ত্র কেনার চেষ্টায় থাকা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এজন্যই যুক্তরাষ্ট্র জোরালোভাবে চাইছে যাতে তাইওয়ান একটি বিক্ষিপ্ত, অপ্রতিসম প্রতিরক্ষা কৌশল বাস্তবায়ন করে।
একই দপ্তরের আরেক কর্মকর্তা জানান, বাইডেন প্রশাসনের শুরুর দিকে তাইওয়ানের সঙ্গে অস্ত্র বিষয়ক কথাবার্তা হয়েছিল। এখন উভয় পক্ষ ইউক্রেন যুদ্ধের অবস্থা দেখে শিখতে চাইছে।
কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, তাইওয়ানের উচিত অন্যান্য অস্ত্রের পাশাপাশি উপকূলীয় বিমান-প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, অস্ত্রবাহী ড্রোন ও সমুদ্রে পুঁতে রাখার মাইন বেশি করে কেনা।
এদিকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধে ভিন্ন ধরনের দৃশ্যপটের প্রস্তুতি হিসেবে তাইওয়ানকে প্রথাগত কিছু অস্ত্র রাখতে হবে।
তাইপের ন্যাশনাল ডিফেন্স পলিসি ফাউন্ডেশনের নিরাপত্তা বিশ্লেষক চিয়েহ চুং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো পরামর্শ আমরা গ্রহণ করেছি। তবে অন্য ধরনের, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের কিছু প্রস্তুতিও আমাদের থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার আশঙ্কা ইউক্রেন যুদ্ধ মার্কিনীদের মাথায় অপ্রতিসময় যুদ্ধের ধারণাটি আরও বেশি গেঁথে দিয়েছে। তাইওয়ানের বিশেষ প্রয়োজনগুলো বিবেচনায় না রেখে হয়তো তারা পরামর্শ দিচ্ছেন। আমাদের আর্টিলারি সিস্টেম অনেক পুরোনো। এগুলো আধুনিকায়ন করা দরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার আর্টিলারি ও গোলাবারুদ নিয়ে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের আশা করি কিভাবে?
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.