গদি সামলাতে সংবিধান সংশোধনের প্রতিশ্রুতি!

গদি সামলাতে সংবিধান সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে গোতাবায়া। প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিজের অবস্থান ঠিক রেখে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্সি (প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা) বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা লোপ পাবার পাশাপাশি মন্ত্রিদের ক্ষমতা বেড়ে যাবে।

রাজাপাকসে গোতাবায়া

বুধবার রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট। ভাষণে বিক্ষোভ দমাতে প্রতিশ্রুতির ঝাঁপি খুলে মিষ্টি কথায় প্রতিবাদকারীদের মাথায় ‘হাত বুলিয়েছেন’ গোতাবায়া। এ সময় দেশকে অরাজকতার হাত থেকে বাঁচাতে নতুন সরকার গঠনেরও অঙ্গীকার করেন তিনি। ব্লুমবার্গ, আল জাজিরা।

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে যে সময় রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতা ছাড়ার দাবিতে সোচ্চার সারাদেশের আপামর জনতা, ঠিক তখনই টেলিভিশন ভাষণে তাদের শান্ত থাকতে বললেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া।

তিনি বলেন, এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্সি বাতিলের জন্য বিভিন্ন মহলের আহ্বান বিবেচনা করা হবে। নতুন সরকার গঠন এবং দেশকে স্থিতিশীল করার বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। সাধারণ ঐকমত্য তৈরির সম্ভাবনা এখনো হারিয়ে যায়নি।

এ সময় প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন সংবিধানের ১৯তম সংশোধনীর বিষয়বস্তু পুনরায় কার্যকর করার জন্য সেটি সংশোধন করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

২৮ এপ্রিল ২০১৫ শ্রীলংকার সংবিধানের ১৯তম সংশোধনী (১৯এ) পাশ করা হয়- যেখানে এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্সির ক্ষমতা বলবৎ করা হয়।

একের পর এক টুইট বার্তায় বিব্রত প্রেসিডেন্ট বলছেন, দেশকে নৈরাজ্যের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। দেশের স্থবিরতা কাটিয়ে ওঠার সংগ্রামে সবাইকে শামিল হতে হবে।

টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে গোতাবায়া বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। দেশের অর্থনৈতিক সংকটকালীন জনগণের অসুবিধার দরুন অভাবনীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল নিয়ে একটি নতুন সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন দল একটি সাধারণ প্রস্তাব পেশ করেছিল। এ বিষয়ে অতীতে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে আমার অনেক আলোচনা হয়েছে। আমিও সেই ধারণাটি লুফে নিয়েছি। তাই সংকট সমাধানের প্ল্যাটফর্ম সেট করতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনারা সবাই জানেন, সোমবার একটি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এ ঘটনার রেশ ধরে অল্প সময়ের মধ্যে সারাদেশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। কারফিউ জারি এবং ত্রি-বাহিনী মোতায়েন করার আগেও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সংসদ সদস্যসহ কমপক্ষে ৯ জনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, ৩ শতাধিক লোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে

এদিকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে অথিষ্ঠিত হলেন ৭৩-বছর বয়সী এ রাজনীতিক।