ইউক্রেনের খাদ্য মজুত আটকে থাকায় জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উদ্বেগ

বৈশ্বিক খাদ্য বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ইউক্রেনে আড়াই কোটি টন খাদ্য মজুত আটকে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানির জন্য বিকল্প পথ তৈরির উপর জোর দিয়েছেন তারা।

ইউক্রেনের বন্দরগুলো রাশিয়া মুক্ত না করলে বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের ঝুঁকি রয়েছে

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বারবক বলেছেন, ইউক্রেনের বন্দরগুলো রাশিয়া মুক্ত না করলে বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের ঝুঁকি রয়েছে। ইউক্রেনে মজুত খাদ্য রপ্তানির জন্য জি-৭ জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প পথ খুঁজছে। ইউক্রেনের গুদামগুলোতে প্রায় আড়াই কোটি টন খাদ্যশস্য আটকে আছে। এ খাদ্যশস্য পৃথিবীর জন্য অতীব জরুরি।

জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের তিনদিনের বৈঠকের সমাপনী অধিবেশনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, চলমান ক্ষুধা সংকট মোকাবেলায় আমরা যতটা খাদ্য বের করে আনতে পারি, তার প্রতিটি টনই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আমরা যে পরিস্থিতিতে পড়েছি, তাতে প্রতিটি সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইউক্রেনের মজুত খাদ্য সড়কপথে রপ্তানির পথ সুগম করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। ইউক্রেনের কয়েকটি প্রধান রপ্তানি পণ্য যেমন ভেজিটেবল অয়েল, কর্ন, গম ইত্যাদি জাহাজীকরণের কারিগরি ও আমলাতান্ত্রিক দিকগুলো খতিয়ে দেখছে ইইউ।

খবরে প্রকাশ, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্য দিয়ে বিকল্প সড়কপথে ইউক্রেনের শস্য নেওয়ার লজিস্টিক ঝুঁকি নিয়ে ইইউর কর্মকর্তারা চিন্তিত। এক্ষেত্রে অবকাঠামোর ঘাটতি রপ্তানি ব্যাহত করতে পারে। তাদের আশঙ্কা, ইউক্রেনে মজুত আড়াই কোটি টন খাদ্যের একটি বড় অংশ আগামী ফলন মৌসুম শুরুর আগে পরিবহন করা সহজ হবে না।

এদিকে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী কিনতে কয়েকমাস আগের তুলনায় ২০-৪০ শতাংশ বেশি দাম দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় খাদ্য রপ্তানিকে ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। অভিযোগ উঠেছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে যুদ্ধকালীন সময়ে বাড়তি অর্থ আয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন কৃষিমন্ত্রী নিকোলাই মারচেঙ্কোসহ কর্মকর্তারা।

ইউক্রেনের কৃষি নীতি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী নিকোলাই সোলস্কি খাদ্যপণ্য রপ্তানির ব্যবসায় জড়িত। তার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোই খাদ্য রপ্তানিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সোলস্কি নিজে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে বিভিন্ন কোম্পানির মালিক। সবচেয়ে বড় কথা, রেল পরিবহন কোম্পানি প্রমওয়াগনট্রান্সের মালিক তিনি। শস্যবাহী ৪০০ ক্যারিয়ার আছে এই কোম্পানির।

এমপি থাকাকালে সোলস্কি সরকারি জমি ক্রয়ের উপর স্থিতাবস্থা জারি করে প্রণীত আইন বাতিলে ভূমিকা রেখেছিলেন। এতে করে ইউক্রেনের কৃষি জমি কম দামে নিলামে কেনার পথ সুগম হয়েছিল। মন্ত্রী হব্রা তিনি আইনটিতে সংশোধনী আনতে কাজ করছেন, যাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ইউক্রেনে কৃষি জমি কিনতে পারে।