আপনি পড়ছেন

মারিওপোলের মতো একই কায়দায় ইউক্রেনের অন্যত্র অপারেশনাল কলড্রন বা আভিযানিক কড়াই তৈরির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছেন রুশ জেনারেলরা। গোড়াতে পুরো ডনবাস অঞ্চলের জন্য একটি বড় কলড্রন তৈরির কথা ভাবলেও এখন কৌশল পাল্টে তিনটি কলড্রন গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন তারা।

russia armoured convoy tlsdভারি গোলাবর্ষণের মাধ্যমে সোলেদার-লিসিচানস্ক হাইওয়েতে যান চলাচল বন্ধ করার কথা ভাবছে এলপিআর মিলিশিয়ারা

রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বারদিয়ানস্ক ও মারিওপোল বন্দরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর রাশিয়ার সমর কৌশলবিদরা ডনবাস অঞ্চলে মোতায়েন ইউক্রেনের প্রায় ৪০ হাজার সৈন্যকে একই কায়দায় ঘায়েল করার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় শক্ত প্রতিরোধ এবং ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত প্রতিকূলতার কারণে কৌশল পাল্টে ইউক্রেনীয়দের ধাপে ধাপে বিচ্ছিন্ন ও কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে ।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন, লুহানস্ক শহর থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার দূরের লিসিচানস্ক ও যেবেরদোনেৎস্ক এলাকায় ইউক্রেনীয়দের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় কলড্রন তৈরিতে কাজ করছে রুশ সৈন্যরা। এজন্য মারিওপোলের যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা চেচেন যোদ্ধাদের কয়েক সপ্তাগ আগে লিসিচানস্ক থেকে ৫০ মাইল দূরের শহর পোপসানায় মোতায়েন করা হয়।

পোপসানা থেকে উত্তরে ও পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে লিসিচানস্কের উপকন্ঠে পৌঁছেছে চেচেন দলটি। একই সময়ে পশ্চিম দিক থেকে লিসিচানস্কের দিকে অগ্রসর হয়েছে রাশিয়া-সমর্থিত লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) মিলিশিয়ারা। এরইমধ্যে উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে লিসিচানস্ক। সেখানে কলড্রন তৈরিতে সফল হলে রুশ বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে ইউক্রেনের ৮ হাজার থেকে ১৬ হাজার সৈন্য।

জানা গেছে, এলপিআর মিলিশিয়ারা শুক্রবার রাতে গোরস্কি ও জোলটের কাছের ওরেখভো গ্রাম দখল করেছে। তারা সেখান থেকে কামিশেভাখায় আক্রমণ চালাচ্ছে। কামিশেভাখার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে সেখান থেকে পশ্চিম দিকে ভারী গোলাবর্ষণের মাধ্যমে সোলেদার-লিসিচানস্ক হাইওয়েতে চলাচল বন্ধ করে দিতে পারবে মিলিশিয়ারা।

প্রসঙ্গত, কলড্রন বা কড়াই হচ্ছে যুদ্ধের একটি কৌশল, যেখানে ঢুকে পড়া সৈন্যরা ওই জায়গা থেকে বেরোতে পারে না। কড়াইয়ে অবস্থানরত সৈন্যরা নিজেদের গোলাবারুদ শেষ হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালাতে পারে। এরপর তাদের অবরুদ্ধ অবস্থায় আত্মসমর্পণ অথবা অনাহারে মৃত্যুবরণ করা ছাড়া উপায় থাকে না। মারিওপোলে রুশ বাহিনী এ কৌশলে ইউক্রেনীয়দের কোণঠাসা করে শেষপর্যন্ত আজভস্টালে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে।

কলড্রন তৈরির মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের দ্রুত পরিসমাপ্তি ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছেন রাশিয়ার নীতি-নির্ধারকরা। তাদের মতে, কলড্রন তৈরির মাধ্যমে তুলনামূলক কম প্রাণহানির বিনিময়ে ক্রমশ আরও বেশি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব। দ্বিতীয়ত, কলড্রনে আটকাপড়া সৈন্যদের বন্দী করার মাধ্যমে ইউক্রেনীয় বাহিনীর জনবলে চাপ সৃষ্টি করা যাচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনীয় সৈন্যরা বন্দী হওয়ায় যুদ্ধে রাশিয়ার জয়ের বিষয়টিও প্রচারমাধ্যমে আসছে।

এদিকে ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধের গতি বাড়াতে শনিবার রাশিয়া থেকে ১১ মাইল দীর্ঘ একটি সেনা কনভয় ফ্রন্ট লাইনের দিকে রওনা হয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, ডনবাস ফ্রন্ট লাইনে দীর্ঘকালীন একটি সেনা কলাম মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। ওই কলামকে সামনে রেখে ডনবাসের অভ্যন্তরে রুশ বাহিনী প্রতিরক্ষা জোরদার করবে বলে তাদের ধারণা।

এর আগে ১৬ মে ইউক্রেনের প্রাভদায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, আজভস্টালসহ বিভিন্ন জায়গায় রুশ বাহিনীর হাতে আটক সৈন্যদের ফিরে পেতে বারবার মস্কোকে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিচ্ছে কিয়েভ। রাশিয়া এতে সাড়া দিচ্ছে না। রাশিয়ার সাড়া না মিললে অচিরেই সম্পূর্ণ অপ্রশিক্ষিত নারী-পুরুষদের যুদ্ধে পাঠাতে বাধ্য হবে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর পাঠানো ভারী অস্ত্র নিয়ে এসব অপ্রশিক্ষিত জনবলকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। 

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.