আপনি পড়ছেন

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট চীন সফর শুরু করেছেন। তবে তিনি কি স্বাধীন সফর করছেন, না চীনা সরকারের সাজানো সফরে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে উইঘুর মুসলিম ও বিভিন্ন এনজিওর মধ্যে। তারা উইঘুর ইস্যুতে চীনকে ভালোভাবে চাপ দিতে মানবাধিকার প্রধানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। খবর আরব নিউজ ও এনডিটিভি।

un human rights chief michelle bacheletজাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট

গতকাল সোমবার মিশেল ব্যাচেলেটের ছয় দিনব্যাপী সফর শুরু হয়। সফরের অংশ হিসেবে তিনি আজ মঙ্গলবার ও কাল বুধবার জিনজিয়াং শহর উরুমকি এবং কাশগর পরিদর্শন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে উইঘুররা জাতিসংঘের অধিকার প্রধানকে জিনজিয়াংয়ে সঠিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চীনা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করার আহ্বান জানিয়েছে।

ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে সুদূর-পশ্চিমাঞ্চলে এক মিলিয়নেরও বেশি উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের আটক করার অভিযোগ রয়েছে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি "গণহত্যা" বলে আখ্যা দিয়েছে বছরব্যাপী নিরাপত্তা ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে।

a security person watches from a guard towerএকজন নিরাপত্তাকর্মী গার্ড টাওয়ার থেকে উইঘুরদের বন্দীশিবিরে নজর রাখছেন

চার বছর ধরে মায়ের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম না হওয়া ৩১ বছর বয়সী উইঘুর জেভলান শিরেমেমেট বলেন, আমি আশা করি আমার মায়ের সন্ধান জানতে চীনা সরকারকে জিজ্ঞাসা করবেন মানবাধিকার প্রধান।

তুরস্কে বসবাসকারী আরে উইঘুর আবদুর রশিদ ব্যাচলেটের এ সফর নিয়ে খুব বেশি একটা আশাবাদী নন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, তার সফর উইগুরের কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না। তিনি বলেন, চীনা সরকারের পূর্বে প্রস্তুত করা দৃশ্য নয়, বরং আমি তাদের আমার পরিবারের সদস্যদের মতো ভিকটিমদের দেখতে অনুরোধ করছি। যদি জাতিসংঘের টিম জিনজিয়াংয়ে সীমাহীন প্রবেশাধিকার না পায় তবে আমি তাদের তথাকথিত প্রতিবেদন গ্রহণ করব না।

গতকাল সোমবার চীনের কয়েক ডজন কূটনৈতিক মিশন প্রধানদের সাথে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন ব্যাচলেট। এ সময় তিনি জিনজিয়াংয়ের আটক কেন্দ্র এবং অধিকার রক্ষাকারীদের অ্যাক্সেসের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। বৈঠকে থাকা চীনে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ক্যারোলিন উইলসন বলেন, তিনি জিনজিয়াংয়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ এবং এ এলাকার জনগণের সাথে ব্যক্তিগত কথোপকথনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

ব্যাচেলেটের অফিস জানায়, প্রায় দুই দশকের মধ্যে এটিই চীনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তার প্রথম সফর। চিলির সাবেক এই প্রেসিডেন্টের উচ্চ-স্তরের জাতীয় ও স্থানীয় কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের সংগঠন, ব্যবসায়িক এবং একাডেমিক প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলা এবং গুয়াংজু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বিদেশে থাকা উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকেরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জিনজিয়াংয়ে আটক আত্মীয়দের সাথে দেখা করার জন্য ব্যাচেলেটকে চাপ দিয়ে সমাবেশ করেছে।

ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) এক বছরের নিরাপত্তা ক্র্যাকডাউনের অধীনে দশ লাখের বেশি উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের বন্দী করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যাকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তবে চীন দৃঢ়ভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে তাদের ‘শতাব্দীর মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছে।

ব্যাচেলেট বলেন, আমি আমার সফরে বিভিন্ন লোকের সাথে মতবিনিময় করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। আমি কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

২০১৮ সাল থেকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জিনজিয়াংয়ে নিরবচ্ছিন্ন ও উল্লেখযোগ্য প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য চীনা সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে আসছিল।

এদিকে ব্রাচেলেটের এ সফরের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, জিনজিয়াং-এর মানবাধিকার পরিবেশের একটি সম্পূর্ণ, নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়ন পরিচালনা করার জন্য ব্যাচেলেটকে প্রয়োজনীয় অ্যাক্সেস সরবরাহ করা হবে আমরা এমনটি আশা করি না।

মানবাধিকার নেতৃবৃন্দও মনে করছেন, চীন ব্যাচেলেটের জন্য একটি সাজানো সফরের পরিকল্পনা করে রেখেছে। ব্যাচেলেটকে বন্দিশিবিরগুলোতে যেতে এবং ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার আহ্বানের কারণে কারাবন্দী লোকদের সাথে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে নেতৃবৃন্দ সন্দিহান।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, তার এই সফর হল চীনা সরকারের সত্য ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি চলমান যুদ্ধ। তাই জাতিসংঘকে এ সফর সফল করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

২০০৫ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধানের শেষ সফরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন সামনে বেইজিং অলিম্পিক থাকায় বিশ্বব্যাপী ভাবমর্যাদা রক্ষা করতে অনেক কিছুতে ছাড় দিয়েছিল চীন।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.