যুক্তরাষ্ট্রকে ধুয়ে দিলেন চীনের মুখপাত্র

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ধুয়ে দিলেন চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল উ কিয়ান। তিনি বলেন, নিজেদের জাতীয় স্বার্থকে আন্তর্জাতিক আইন বলে চালানো বন্ধ করে বৈশ্বিক বাস্তবতা মেনে নেওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন আধিপত্যের জন্য এখনো চেষ্টা চালালে ভুল হবে। বরং চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নকে মেনে নেওয়া উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল উ কিয়ান

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সম্প্রতি বলেছেন, চীনের আগ্রাসী ও জবরদস্তিমূলক আচরণ মোকাবেলা করা যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও সমরাস্ত্র মোতায়েনের লক্ষ্য। অস্টিনের এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র কর্নেল উ কিয়ান উপরের কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হলো চীনের শান্তিময় উন্নয়নকে লক্ষ্যনিবিষ্ট ও যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা। কারণ এতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা জোরদার হবে। পৃথিবী আর কখনো আগের মতো এককেন্দ্রিক হবে না, এটা মেনে নিতে হবে। কেবলমাত্র একটি পক্ষই আধিপত্য করবে, সেই যুগ চিরদিনের মতো শেষ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, জবরদস্তির কথা উঠলে বলতে হবে যে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে জবরদস্তির আসল হোতা। তারা এক প্যাকেট সাদা পাউডারকে ইরাকের মতো একটি সার্বভৌম দেশ দখলের অজুহাত হিসেবে যুক্তিযুক্ত মনে করেছে। হোয়াইট হেলমেটসদের একটি সাজানো ভিডিও তারা সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, চীনা জনগণ কখনো ভুলবে না যে ২৩ বছর আগের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো যুগোস্লাভিয়ায় চীনের দূতাবাসে বোমা নিক্ষেপ করেছিল। এটা কেবল জবরদস্তি নয়, অপরাধ ছিল।

আন্তর্জাতিক আইনভিত্তিক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্বে আইন ভঙ্গকারী হিসেবে স্বীকৃত। তারা সবসময় নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আইনের কথা বলে। ইরানের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ), পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণে স্বাক্ষরিত ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি ও বিমান চলাচল সহযোগিতা জোরদারে স্বাক্ষরিত ট্রিটি অন ওপেন স্কাইজের মতো চুক্তিগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পিছু হটেছে।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড তাদের স্বার্থপরতা ও স্ববিরোধিতাকে নগ্নভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে। তারা অন্য কাউকে উপদেশ দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।