দখলকৃত অঞ্চল উন্নয়নে রাশিয়ার বিশেষ তহবিল

ইউক্রেনে নিজেদের দখলকৃত অঞ্চল উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠন করেছে রাশিয়া। এছাড়া সেখানকার শহরগুলো পুনর্গঠনে অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে রাশিয়ার স্থানীয় সরকারগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার অবকাঠামো বিষয়ক উপ-প্রধানমন্ত্রী মারাত খুশনুলিন এ কথা বলেছেন।

ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোর সঙ্গে রাশিয়া সর্বোচ্চ রকম সমন্বয়ে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন মারাত খুশনুলিন

মারাত খুশনুলিন বলেছেন, ইউক্রেনের মুক্তাঞ্চলের (রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত) সঙ্গে সর্বোচ্চ সমন্বয়ে আগ্রহী রাশিয়া। এ অঞ্চলের সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে রাশিয়া বিনিয়োগ করবে। এরইমধ্যে লুহানস্কে একটি আধুনিক অ্যাসফল্ট প্লান্ট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে নির্মাণ প্রকৌশলীরা ডনবাস অঞ্চলে কাজ শুরু করেছেন। ৩৫০ জন প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞের একটি দল গত সপ্তাহে লুহানস্কে কাজ করেছেন। একই সময়ে নির্মাণ সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ৭০টি গাড়ি লুহানস্ক পৌঁছেছে।

তিনি আরও বলেন, লুহানস্কের সঙ্গে রাশিয়ার রেল যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো একটি ট্রেন গত শনিবার রাশিয়া থেকে মানবিক সহায়তা নিয়ে লুহানস্ক পৌঁছেছে।

মারাত খুশনুলিন বলেন, এ মুহূর্তে প্রধান কাজ হলো মুক্তাঞ্চলের স্থানীয় অর্থনীতির পুনর্জাগরণ, সড়ক সেতু ও অন্যান্য অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং কৃষি পণ্য উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ। আমরা বিশ্বাস করি এটা এক বিরাট সম্ভাবনাময় অঞ্চল এবং আমাদের রুশ পরিবারে এ অঞ্চলের দারুণ ভবিষ্যত রয়েছে।

গত মঙ্গলবার মারাত খুশনুলিন খেরসন সফরে গিয়ে সেখানকার মিলিটারি-সিভিলিয়ান প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ক্রিমিয়ার প্রশাসনিক প্রধান সের্গেই আকসিয়ানভ এ বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী ‘মুক্তাঞ্চলের গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা’ নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে রুশ প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে।

এর আগে মারিওপোল ও ভলনোভাখা সফরে গিয়ে রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী এলাকা দুটির পুনর্গঠন কাজের ব্যয় প্রাক্কলন নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। জাপরোঝঝিয়া সফরকালে তিনি সেখানকার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ইউক্রেনকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, জাপরোঝঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র সবসময় চালু থাকবে। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো জাপরোঝঝিয়া থেকে বিদ্যুৎ নিতে এবং সেজন্য মূল্য পরিশোধ করতে প্রস্তুত থাকলে জাপরোঝঝিয়া ইউক্রেনের জন্য কাজ করবে। অন্যথায় কেন্দ্রটি রাশিয়ার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।

রাশিয়া-সমর্থিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর) প্রধান ডেনিস পুশিলিন আজ রিয়া নভোস্তির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়া থেকে নেওয়া সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর জন্য শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। মারিওপোলের আজভস্টাল কারখানার ধ্বংসাবশেষ ভেঙ্গে সেখানে টেকনোপার্ক নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।

ইজভেস্তিয়া জানিয়েছে, রাশিয়ার স্থানীয় সরকারগুলো ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর পুনর্গঠনে সহযোগিতার আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এরইমধ্যে বাসকিরিয়া, ব্রায়ানস্ক, কুরস্ক, সুভাশিয়া, লেনিনগ্রাদ, মস্কো ও শেলিয়াবিনস্ক কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়, মস্কো নগর ও অঞ্চল প্রশাসন ডনবাস অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দুই শহর দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের পুনর্গঠনে অংশীদার হবার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। এ বিষয়ে শহর দুটির সঙ্গে মস্কো কর্তৃপক্ষের শীঘ্রই চুক্তি সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউক্রেনের স্নেঝনোয়ি শহরের পুনর্গঠনে মানবিক ও অন্যান্য সহযোগিতা দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে রাশিয়ার সামারা ওব্লাস্ত। আজ শুক্রবার সামারা প্রদেশের গভর্নর দিমিত্রি আজারভ ও স্নেঝনোয়ি শহরের মেয়র আলেক্সান্ডার বর্তসভ এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন।