রাশিয়ার সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে জার্মানি!

জার্মানির সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হ্যান্স-জর্জ ম্যাসেন সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনকে বার্লিন যেসব অস্ত্র সরবরাহ করছে তার কারণে রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সরাসরি সংঘাত শুরু হতে পারে। কারণ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, যুদ্ধ চলাকালে কোনো এক পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করলে সরবরাহকারী রাষ্ট্রও যুদ্ধের পক্ষ হয়ে যায়। খবর আরটি।

জার্মানির সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হ্যান্স-জর্জ ম্যাসেন

২০১২-১৮ সাল পর্যন্ত জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ফেডারেল অফিস ফর দ্য প্রোটেকশন অব দ্য কনস্টিটিউশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হ্যান্স-জর্জ ম্যাসেন। সম্প্রতি টিভি বার্লিনে বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি জানান, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করে রাশিয়ার সাথে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে জার্মানি।

কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সিদ্ধান্তের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধরত কোনো পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করা হলে সরবরাহকারী রাষ্ট্রও যুদ্ধের পক্ষ হয়ে যায়। ইউক্রেনে আমরা হেলমেট ও ব্যান্ডেজ সরবরাহ করছি না বরং অস্ত্র সরবরাহ করছি। আর এ ব্যাপারে আমার দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এর মাধ্যমে আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই যুদ্ধের একটি পক্ষ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছি। এ নিয়ে আমি জড়িয়ে পড়ার ভয়ের মধ্যে আছি।

ইউক্রেনে ভারি অস্ত্র পাঠাতে সম্মত হয়েছে জার্মানি

ম্যাসেনের মতে, নিজস্ব কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়াই ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে জার্মানি রাশিয়ার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে। এ অবস্থায় তিনি জার্মান নেতৃত্বকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন, কেনো তারা দেশটিকে স্বেচ্ছায় পরমাণু সংঘাতের বিপদের সামনে তুলে ধরছে।

ম্যাসেনের মতে, জার্মানির মাটিতে ১১৯টি আমেরিকান সামরিক স্থাপনা রয়েছে, যেগুলোকে মস্কো লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে।

জার্মানির নিজস্ব নাগরিক প্রতিরক্ষা এবং সশস্ত্র বাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে ম্যাসেন বলেন, জার্মান সমাজ যুদ্ধের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। এছাড়া জার্মানি রাশিয়ান গ্যাস আমদানির উপর নির্ভরশীল এবং নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত গম ও সার উৎপাদন করে না। তাই সার্বিকভাবে মস্কোর সাথে গভীর দ্বন্দ্ব বার্লিনের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

ইউক্রেনে হামলা শুরুর প্রথম দিকে জার্মানি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা ইউক্রেনকে কোনো ধরনের ভারী অস্ত্র সরবরাহ করবে না। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছিল, এর মাধ্যমে তাদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যদের অব্যাহত চাপের মুখে আগের সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র দিতে সম্মত হন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ।