উত্তাল ভারতে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মুসলিম নেতৃবৃন্দ

মহানবী হযরত মুহম্মাদকে (সা.) নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। বিশ্বজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এরই জেরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। তবুও ক্ষোভ প্রশমিত হচ্ছে না। ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে চলছে সংঘাত, সংঘর্ষ। এ অবস্থায় এগিয়ে এসেছেন মুসলিম নেতৃবৃন্দ। শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

পীরজাদা সানাউল্লাহ, ফাইল ছবি

গত শুক্রবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে চলছে অবরোধ, বিক্ষোভ। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অনুরোধ সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা নড়তে নারাজ। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় মুসলিম নেতৃবৃন্দ।

সামাজিক যোগাযো গমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও বার্তায় হুগলির ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা সানাউল্লাহ সিদ্দিকি বলছেন, আমাদের প্রিয় নবি (স.) কখনো কাউকে কষ্ট দেননি। অথচ পশ্চিমবঙ্গে চলমান অবরোধে হাসপাতালের রোগী, ডাক্তাররাও আটকে আছেন। তাই হাত জোড় করে বলছি অবরোধ বন্ধ করুন। আসুন আমরা আইনের আওতায় লড়াই করি। যিনি অন্যায় করেছেন, তিনিই আইনত শাস্তি পান। আমাদের হিন্দু ভাইরাও নবিজীকে (স.) ভালবাসেন। তাই অবরোধ সরিয়ে নিন। গাড়ি যেতে দিন।

নূপুর শর্মার গ্রেপ্তার দাবিতে বিক্ষোভ

ভিডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, একজনের কর্মের জন্য পাঁচজনকে খারাপ বলা যায় না। আমাদের ভেতর যারা বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আইনের পথেই লড়তে হবে।

আরেক পীরজাদা সাফেরি সিদ্দিকী বলেন, প্রিয় নবি (স.) আমাদের ঈমান, ইবাদত, ভালবাসা সবকিছু। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ অবরোধ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া কখনোই নবির শিক্ষা নয়। এসবে উসকানি দিয়ে কেউ কেউ দেশে হিংসা সৃষ্টি করতে চাইছেন। তাদের থেকে দূরে থাকুন। আইন হাতে তুলে নেবেন না।

নাখোদা মসজিদের ইমাম শাফিক কাশমিও এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিবাদ করুন, কিন্তু হিংসার আশ্রয় নেবেন না। রাস্তাও আটকাবেন না। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু, মুসলিম সবাই মিলেমিশে থাকে। কেউ কাউকে কষ্ট দেবেন না।

নাখোদা মসজিদের ইমাম আরো বলেন, আমাদের প্রিয় নবি (স.) বলেছেন, রাস্তায় পাথর পড়ে থাকলে সরিয়ে দাও, পথচারীর কষ্ট হবে। ইসলামের শিক্ষা কাউকে কষ্ট দিতে বলে না। আপনারা মামলা করুন, এফআইআর করুন। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কিছু করবেন না।

ফুরফুরা শরিফের হিজবুল্লাহ সংগঠনের সহসম্পাদক নুরুল ইসলামও বলেন, মিছিলের নামে ধ্বংস ও মানুষের ক্ষতি ইসলাম অনুমোদন করে না।