সংকটে আফ্রিকা, রাশিয়া থেকে আমদানির সুযোগ চায়

রাশিয়া থেকে আমদানি প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে উঠেছে আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সুইফটে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে আফ্রিকার দেশগুলোতে। আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল রোববার ব্রাসেলসকে অনুরোধ করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যেন রাশিয়া থেকে আমদানি প্রক্রিয়া আফ্রিকার জন্য সহজ করে দেয়। তা না হলে আফ্রিকার দেশগুলো খাদ্য সংকটে পড়ে যাবে। খবর পলিটিকো।

আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল

ম্যাকি সাল সেনেগালের রাষ্ট্রপতিও। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্য ও সার আমদানিতে তারা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। ফলে উৎপাদন ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। লে জার্নাল ডু ডিমানচেকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি ও অর্থ প্রদান করতে চাই, কিন্তু এটি অসম্ভব হয়ে উঠছে। তাই আমরা ইউরোপীয়দের কাছে গ্যাস এবং তেলের মতো একই প্রক্রিয়া চাই।

নন-ইইউ দেশগুলোতে রাশিয়ানদের সাথে লেনেদেনর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ইইউ। তবে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সুইফটের লেনদেন রুশ ব্যাংকগুলো বাদ দেওয়ায় ইউরোপের বাইরেও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক লেনদেনে ঝামেলা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়মানুযায়ী, গ্যাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে অর্থ লেনদেনের কিছু সুযোগ রয়েছে।

গত মাসে এইউ প্রধান ম্যাকি সাল ইইউ নেতাদের একটি বৈঠকে বলেছিলেন, রাশিয়ার আর্থিক ব্যবস্থার উপর নিষেধাজ্ঞার ফলে আফ্রিকায় শস্য এবং সার আমদানি হুমকির মুখে রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। পুতিন জানান, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় মূলত বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে প্যারিসে ম্যাকি সাল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। এ সময়ও একই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ম্যাক্রোন তখন সালকে বলেছিলেন, ইইউ নিষেধাজ্ঞার সাথে লেনদেন সংক্রান্ত বাধাগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।

অন্যদিকে যখন কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ান নৌ-অবরোধে বিশ্ব খাদ্য সরবরাহ থেকে ২০ মিলিয়ন টনেরও বেশি শস্য আটকে যায়, তখন জাতিসংঘ, ব্রাসেলস এবং ওয়াশিংটন থেকে এইউ প্রধান সালের কাছে ফোন আসে। সাল তাদের বলেছিলেন, অবরোধে তার দেশ সেনেগালসহ আফ্রিকায় খাদ্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে।

আফ্রিকান নেতা সতর্ক করছেন, দুর্ভিক্ষের কারণে আফ্রিকার অস্থিতিশীলতা ইউক্রেনের যুদ্ধের মতোই সংকটপূর্ণ। ব্রাসেলসে আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। আলোচ্যসূচিতে খাদ্য সংকট গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে। ইইউ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বর্তমান খাদ্য সংকটের জন্য একমাত্র রাশিয়াকেই দায়ী করছেন।